নাটোর অফিস ॥
নাটোরের নলডাঙ্গায় নলডাঙ্গায় নিহত সার ব্যবসায়ী অরুণ শর্মার ছিনতাই হওয়া ৩ লাখ টাকার মধ্যে ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা সহ আল আমিন (২২) নামে কলেজ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইপিএলের জুয়ায় হেরে যাওয়ার পর প্রেমিকার কাছ থেকে ধার নেয়া ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেই ছিনতাইয়ের পথ বেছে নেয় উপজেলার সোনাপাতিল গ্রামের সার ব্যবসায়ী অরুণ শর্মা হত্যার অভিযুক্ত আসামী রাজশাহী সিটি কলেজের অর্নাস প্রথম বর্ষের ছাত্র ও একই গ্রামের সাকের আলীর ছেলে আল আমিন । রোববার (২৯ নভেম্বর) দুপুর দুইটার সময় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে সার ব্যবসায়ী অরুণ শর্মা (নোকান ঠাকুর) হত্যার ঘটনার এমন বর্ণনা দেন। পরে তাকে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়। এর আগে শনিবার (২৮ নভেম্বর) ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার জিম ছাত্রাবাস থেকে গ্রেফতার করা হয় আল আমিনকে। এসময় ছিনতাইয়ের দুই লাখ ১৩ হাজার টাকার তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে আজ সকালের দিকে আরো ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। আগামীকাল সোমবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১১ টার সময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের জন্য এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে।
সন্ধ্যার দিকে এতথ্য নিশ্চিত করে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজররুল ইসলাম জানান, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আল আমিন আদালতকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি আইপিএলের জুয়ায় অংশ নিয়ে ২০ হাজার টাকা হেরে যান। এই জুয়ার টাকা পরিশোধ করতে তিনি তার প্রেমিকার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার করেন। পরে প্রেমিকার ধারের টাকা পরিশোধ করতে ছিনতাইয়ের পথ বেছে নেন তিনি। আর ছিনতাই করতে গিয়ে হত্যা করে ফেলেন সার ব্যাবসায়ী অরুণ শর্মাকে। পরে ছিনতাই করা টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা প্রেমিকাকে পরিশোধও করেন। আর বাকি টাকা নিয়ে রাজশাহীতে তার ছাত্রাবাস যান। ওসি আরো বলেন, অরুণ শর্মা একজন সার ব্যবসায়ী। তার নিজস্ব লাইসেন্স ছিল না। মেসার্স ফাতেমা ট্রডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে লাইসেন্স দিয়ে নলডাঙ্গা বাজারে সার ব্যবসা করতেন। গত ২১ নভেম্বর (শনিবার) রাত ৯টার দিকে অরুণ শর্মা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সোনাপাতিল গ্রামে তার নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে নলডাঙ্গা ব্রিজ এলাকা পার হয়ে সোনাপাতিল গ্রামের তালতলা এলাকায় পৌছালে পিছন থেকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে আল আমিন। এ সময় অরুন শর্মা গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে তার কাছে থাকা প্রায় তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় আল আমিন। পরে তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে স্থানীয় বেসরকারি বিসমিল্লাহ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার সময় সেখানে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শ্যামলী শর্মা বাদি হয়ে ২২ নভেম্বর (রোববার) রাতে নলডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ঘটনা উদঘাটনে অভিযানে নামে পুলিশ। অবশেষে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার জিম ছাত্রাবাস থেকে গ্রেফতার করা হয় আল আমিনকে। এসময় ছিনতাইয়ের দুই লাখ ১৩ হাজার টাকা তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।