নাটোর অফিস॥
আহবমান বাংলার চিরচেনা রুপের অন্যতম উৎসব পলই দিয়ে মাছ ধরা। শীতের মাছ ধরার এই উৎসবের অপেক্ষায় থাকে গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। অন্যান্য অঞ্চলের মত নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বিপ্রবেলঘড়িয়া ইউনিয়নের হরিদাখলসী গ্রামের কুড়িল বিলে একযুগ পর পুনরায় এই পলই উৎসব হয়। সেচ্ছাসেবী সংগঠন “হরিদাখলসী যুব সংঘের নেতৃত্বে সকল সদস্যরা গ্রাম বাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে পলই দিয়ে মাছ ধরার উৎসবের আয়োজন করেন।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) হরিদাখলসী কুমিল্লা পাড়া কুড়ি বিলে সকালে শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত চলে এই মাছ ধরার পলই উৎসব । এ সময় হরিদাখলসী গ্রাম’সহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম বানুরভাগ, নশরৎপুর, তেঘরপাড়া,ধামনপাড়া,সমসখলসী গ্রামসহ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার প্রায় দুই শতাধিক মানুষ পলই দিয়ে মাছ ধরার এ উৎসবে মেতে উঠেন।
হরিদাখলসী কুড়িল বিলে পলই সহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দল বেঁধে মাছ ধরার এমন দৃশ্য যেন দেখার মতো। দলবদ্ধভাবে মাছ শিকারের এ দৃশ্য দেখতে বিলের দুই পাড়ে ভিড় জমায় বিভিন্ন বয়সী ও বিভিন্ন শ্রেণীর নারী-পুরুষ সহ হাজারো উৎসুক জনতা। উৎসবে অংশ নেয়াদের হাততালি, জোরে জোরে চিৎকার করে উৎসাহ দেন পাড়ে অবস্থানরত লোকজন। বিলে বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলেমেয়েদেরও দেখা যায় মাছ ধরতে। মাথায় ও কোমরে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরতে দেখা যায় তাদের।
প্রবীণ মাছ শিকারি ইয়াছিন আলী বলেন, বছরের এই দিনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকতাম। সবাই মিলে একসঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা ছিল। দিন দিন পরিবেশ ও আবহাওয়ার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ জলাশয় ইজারা দেয়ায় পলই বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। এছাড়া অভাব অনটন ক্রমশ গ্রাস করে ফেলছে চিরাচরিত এই গ্রামীণ উৎসবের অতীত ঐতিহ্যকে। এরপরও বছরের এই দিনে সবাই মিলে একযুগ পর মাছ ধরার উৎসব পালন করে মনে হচ্ছে সেই আগের দিনটা আবার ফিরে পেয়েছি।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন হরিদাখলসী যুব সংঘ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ জামিল হায়দার জনি বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আমারা সংগঠনের সকল সদস্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।