নাটোর অফিস॥
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০১৪ সালের আগুন সন্ত্রাসের মত আবারো ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বাসে অগ্নিসংযোগ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নস্টের চেষ্টা চলছে। এসব অপচেষ্টা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ কখনোই করবেনা-তা মীর্জা ফখরুল ইসলামদের বোঝা উচিৎ। মিথ্যাচার করা উচিৎ নয়। কোন অপকর্ম করে কেউ ছাড় পাবেনা। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সকল অপকর্মের বিচার করা হবে। জনগনকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ সকল বিশৃংখলতার জবাব দেবে।
ওবায়দুল কাদের রোববার বেলা ১১টায় নাটোর নবাব নিরাজ-উদ-দৌলা সরকারী কলেজ মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ প্রতিনিধি সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন,সাংগঠনিক ঐক্যের মাধ্যমে দলকে গণমুখী করতে হবে। দেশে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। দলের পকেট কমিটি গড়ার প্রবনতা পরিহার করে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, সুসময়ের অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে দলের ক্ষতি করা হচ্ছে। এই প্রবনতা পরিহার করতে হবে। নেতাদের কলহ-বিভেদ দলের সর্বনাশ করছে। সব রকমের বৈরিতা পরিহার করে দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। অসুস্থ্য ও অসহায় নেতা-কর্মীদের খোঁজ-খবর রাখতে হবে।
সেতু মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের মহানায়ক আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ভূলুন্ঠিত স্তব্ধ করে নিষিদ্ধ করা হয় বঙ্গবন্ধু আর জয় বাংলা শ্লোগানকে। ছিনতাই করা হয় বিজয়ের মুকুট। হাজার বছর ধরে লড়াই করা বাঙালী জাতির ধারাবাহিক পথ পরিক্রমায় বিক্ষুদ্ধ দেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আগমন ঘটে জননেত্রী শেখ হাসিনার। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের তিনবারে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার সুফল পাচ্ছেন দেশের জনগন। তাঁর দূরদর্শী সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বের কারনে করোনাকালীন সময়েও দেশের অর্থনীতির চাকা অচল হয়নি, সচল আছে। উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নিশ্চিত করে দেশে এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মত মেগা প্রকল্প।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে সংগ্রামের অগ্নি মশাল জ্বেলে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ধ্বংস স্তুপের উপরে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা উড়িয়েছেন তিনি, গনতন্ত্রকে করেছেন শৃংখলামুক্ত। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়ে জাতিকে তিনি বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্ত করেছেন। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তিনি দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উচিৎ প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে অবদান রাখা।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপির সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আখতার জাহান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি, রতœা আহমেদ এমপি, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাব্লু সরকার, নাটোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান খান, নাটোর পৌর মেয়র উমা চ্যেধুরী জলি প্রমুখ।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, এই সভা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পারস্পরিক আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে সকল সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করতে দলকে সাংগঠনিকভাবে আরো সুসংহত করা সম্ভব হবে।
সভায় নাটোর জেলার উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।