নাটোর: একাধিক মামলার আসামী, ‘যুদ্ধাপরাধী’ পরিবারের সন্তান, জামায়াতে ইসলামীর সাথে পারিবারিক সম্পৃক্ততা ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডে অনুপস্থিতির অভিযোগ এনে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ২ নং বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসাহাক আলী মোল্লাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ অব্যাহতির পেছনে নাটোর-৪ আসনের সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের কোন প্রভাব নেই উল্ল্যেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ভরটহাট এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গুরুদাসপুর শাখার সভাপতি আব্দুল খালেক মোল্লার ভাই ইসাহাক আলী মোল্লা ২০১৪ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অগ্নিসংযোগসহ সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত থেকে একাধিক মামলার গ্রেফতার ও জেলহাজতে থাকায় তা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পরিপন্থী হয়েছে। তাই ইসাহাক আলী মোল্লাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমান জানান, ‘গত ০৪/০৬/২০১৮ তারিখে দলের বিশেষ বর্ধিত সভা ডেকে উপস্থিত নেতাকর্মীদের বক্তব্য ও মতামতের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনে অনুসরণ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিতর্কিত লোকদের দায়িত্ব থেকে জরুরীভিত্তিতে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই সাথে উক্ত পদ পূরণে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী হীরাকে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়েছে।’
‘কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের মতামতের আলোকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অমান্য করে নাটোর শহরে সংবাদ সম্মেলন করে সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া মানে দলের সুসংহত ঐক্য ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে দল থেকে জামাত-বিএনপির সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত থাকবে ভবিষ্যতেও’- জানান মিজানুর রহমান।
দলের উপজেলা সভাপতি আব্দুল জলিল প্রামাণিক বলেন, ‘ নির্বাচন আসন্ন। বিতর্কিত লোক দলে রাখলে ত্যাগী কর্মীরা মনোবল হারাচ্ছেন। একজন শ্রমিক নেতা হিসেবে ইয়াকুব আলী হীরার ব্যাপক জনসমর্থন ও শ্রমিক-কর্মী রয়েছেন, যারা দলের জন্য আগামী নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। সেই বিবেচনায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সাংসদ কুদ্দুস কোন প্রভাব খাটাননি। সিদ্ধান্ত না মেনে দলের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সাইদুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য মৌটুসী মুক্তা, ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা জাফর প্রমুখ।
এ ব্যাপারে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ইসাহাক আলী মোল্লা বলেছেন, দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থীভাবে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনি প্রতিহিংসার শিকার মাত্র।