নাটোর অফিসঃ দিনভর ঘটনাটি নিয়ে বিস্তর উত্তেজনা বাগাতিপাড়ায়। খবর, বাগাতিপাড়ার মালঞ্চি মোড়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এসআই) রাকিবুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেছেন নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুলের দুই গাড়িচালক মোমিন ও ইয়াকুব। পাল্টা খবর, সাইড না দেয়ায় মোমিন ও ইয়াকুবকে মেরেছেন এসআই রাকিবুল।
সাংসদ সমর্থক না পুলিশের এস আই- কে কার হাতে মার খেয়েছে বা লাঞ্ছিত হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খুলছে না ঘটনার প্রকৃত সাক্ষী স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা। অন্তত গণমাধ্যমের কাছে এ নিয়ে তারা কথা বলা থেকে বিরত থেকেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা এটি।
তবে সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুলের দাবী, তার গাড়ির চালকেরা ‘নিরীহ প্রকৃতির’ ছেলে।
পুলিশ ও এমপি বকুল সমর্থকদের পাল্টা বক্তব্য থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি জাতীয় দৈনিক জানাচ্ছে, দুপুরে সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুলের গাড়ির চালক মোমিন ও ইয়াকুব একই মোটরসাইকেলে চড়ে মালঞ্চি রেলগেট হয়ে সাংসদের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। রেলগেটের ঢালু সড়কে তাঁরা এলোমেলো গতিতে গাড়ি চালাতে থাকলে পেছনে মোটরসাইকেলে থাকা বাগাতিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল ইসলাম তাঁদের থামতে বলেন। তবে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি।
এমন পরিস্থিতিতে গাড়ি থেকে নেমে এসআই রাকিব দুজনের কাছে গিয়ে কৈফিয়ত তলব করে। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় যা পরবর্তীতে ধ্বস্তাধ্বস্তি রুপ নেয়।
রেলগেট এলাকার এক ভ্যানচালক প্রথমে বলেন, ‘আমরা কিছু বলতে চাই না। কিছু দেখিও নি।’
পরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পুলিশ আর এমপির লোক, সত্যি ঘটনা বললে, যার বিরুদ্ধে যাবে সেই পরে এসে খড়গ চালাবে।’
ধ্বস্তাধ্বস্তির এক পর্যায়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে মোমিন ও ইয়াকুবকে থানায় নেয়ার সময় সাংসদ বকুলের ভাই ও বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওহিদুল ইসলাম তাঁদের পুলিশের থেকে নিয়ে নেন। এ সময় সাংসদের কর্মী–সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। সাংসদ বকুলের সমর্থকরা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে, এমন আশংকায় নাটোর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাতসহ প্রায় ২০ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান।
দুপুরে এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বাগাতিপাড়া থানার ওসি নাজমুল হককে ফোন করা হলে তিনি সন্ধ্যার পর কথা বলার আশ্বাস দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বলেন, ঘটনার সময় এসআই রাকিবুল ইসলাম দায়িত্বে ছিলেন। উচ্ছৃঙ্খলভাবে মোটরসাইকেল চালাতে দেখে তিনি সাংসদের গাড়ির চালকদের থামতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা নির্দেশ মানেননি। উল্টো তাঁরা ওই এসআইকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছেন। তিনি কিছুটা আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সাংসদ শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার গাড়ির চালকেরা নিরীহ প্রকৃতির ছেলে।’
‘ঢালু সড়কের কারণে তাঁরা মোটরসাইকেল থামাতে কিছুটা দেরি করেছিল। এ অপরাধের কারণে তাদের মারপিট করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে যদি দোষ পায়, তাহলে আমি তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেব’-সাংসদ যোগ করেন।’