নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম, নাটোর॥
নাটোরের গুরুদাসপুরে ঢাকা-নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন শহর থেকে গ্রামে ফেরা মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফেরার অভিযোগ এনে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একদল প্রতারক বিরুদ্ধে। উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর অভিযোগ করেছেন।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী ব্যক্তির পরিবার ও গ্রামবাসীরা জানায়, তিন দিন আগে ঢাকা ও গাজীপুর থেকে নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন নিজ গ্রাম নারায়ণপুরে ফেরেন। পরিস্থিতি বিবেচনা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন তাঁরা। এ সুযোগে পাশের বিয়াঘাট বাবলাতলা গ্রামের রোস্তাম আলী স্থানীয় গ্রাম পুলিশ শহিদুল ইসলামের সাথে যোগসাজশ করে তাদেরকে করোনা আক্রান্তের ভয়ভীতি দেখিয়ে জনপ্রতি ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা করে টাকা হাতিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান জানান, তাঁর ছেলে রাজু আহম্মেদ ৩ দিন আগে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফেরেন। তার পর থেকে বাড়িতেই অবস্থান করছে। গ্রাম পুলিশ শহিদুল ইসলামের সাথে রোস্তাম আলী এসে তার ছেলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দাবী করে দুই হাজার টাকা চাঁদা চান। না দিলে বিষয়টি পুলিশকে জানানোর হুমকি দেন। তাদের ভয়ে গ্রাম পুলিশের উপস্থিতিতে রোস্তম আলীর হাতে দুই হাজার টাকা তুলেদেন তিনি।
একই রকম পরিস্থিতির শিকার গাজীপুর থেকে ফেরা রিক্সা চালকের স্ত্রী রমেলা বেগম ৫০০ টাকা, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ফেরা শাহাদৎ হোসেন ৫০০ টাকা ও আব্দুল মান্নান এক হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন একই প্রতারকদের হাতে।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামবাসীর মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে স্থানীয়ভাবে দেখার জন্য বলা হয়েছে। তার পরও বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।’
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মোবাইল ফোনে আমিও এসব অভিযোগ পেয়েছি। তবে ঘটনা যাই ঘটুক গ্রাম পুলিশকে অভিযোগকারীদের সাথে সমঝোতা করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে এমন অভিযোগ কাম্য নয়। তার পরও এসব ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’