নাটোর অফিস॥
জানুয়ারী থেকে মার্চের মাঝামাঝি নাটোরে বিদেশ ফেরত ব্যক্তি এসেছেন প্রায় দেড় হাজার। শুধু পহেলা মার্চ থেকে আজ(২১শে মার্চ) পর্যন্ত জেলায় এসেছেন এক হাজারেরও বেশি ব্যক্তি। ইউরোপ ও মধ্যপ্রচ্য ফেরত এসব ব্যক্তিদের আগমন তথ্য উপজেলা পর্যায়ে থাকলেও নেই স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। শুধু তাই নয়, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের কতজন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন সে তথ্যেও গড়মিল দেখা গেছে সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদের মধ্য।
আজ শনিবার(২১শে মার্চ) জেলার সদর, নলডাঙ্গা, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, লালপুর, বাগাতিপাড়া ও সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ জাগোনাটোর২৪.কমকে স্ব-স্ব উপজেলার বিদেশ ফেরত ব্যক্তির সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, জানুয়ারী থেকে ৬৩৫ জন প্রবাসী নাটোর সদরে এসেছেন। এদের মধ্যে চলতি মার্চেই এসেছেন ৩৬৫ জন। এদের মধ্যে ১৪০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি জানান, তাদের কাছে জানুয়ারী থেকে পরবর্তী দেড় মাসের তথ্য নেই। তবে চলতি বছেরের ১৮ই ফেব্রুয়ারী থেকে ১৮ই মার্চ পর্যন্ত ৯৫ ব্যক্তি নলডাঙ্গা ফিরেছেন। আজ সকাল পর্যন্ত ৮১ জন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ জানান, জানুয়ারী থেকে এখন পর্যন্ত বড়াইগ্রামে ২০৯ জন প্রবাসী ফিরেছেন। আজ সকাল পর্যন্ত ২৫ জন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন জানান, চলতি মার্চে আজ পর্যন্ত ১০৭ জন ব্যক্তি গুরুদাসপুরে ফিরেছেন। আজ সকাল পর্যন্ত ৪১ জন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, জানুয়ারী থেকে আজ পর্যন্ত ২২৫ জন ব্যক্তি লালপুরে ফিরেছেন। আজ সকাল পর্যন্ত ৯ জন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল জানান, চলতি মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত ১০৮ জন ব্যক্তি বাগাতিপাড়া ফিরেছেন। আজ সকাল পর্যন্ত ৪০ জন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার জানান, জানুয়ারী থেকে আজ পর্যন্ত ১৮৮ জন ব্যক্তি সিংড়ায় ফিরেছেন। ৪ জন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ করেছেন। বাকীরা সুস্থ আছেন। কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে মনিটরিং ও জরিমানা করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার ৭টি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়ন ও ৮টি পৌর এলাকায় করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ঘোষণা করা হয়েছে। বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের পাঠানো তালিকায় একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার এসছে বলেও জানিয়েছে উপজেলা পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্ত।
এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের তালিকা চাওয়া হলে তা দিতে পারেননি জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান। পাশাপাশি, কতজন ব্যক্তি কোয়ারেন্টাইনে আছে, সে তথ্যও মিলছে না স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় নতুন করে ১৮ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৯ জন। আজ কোয়ারেন্টাইন হতে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯ জন এবং এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২০ জন।
সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান বলেন, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের অবস্থানের সকল তথ্য আমাদের কাছে নেই। এসব তথ্য সংগ্রহ চলছে। শীঘ্রই কোয়ারেন্টাইনের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের তথ্য পাওয়া যাবে।