দলিত সম্প্রদায় এমন একটি গোষ্ঠী যারা সমাজের অন্যান্য গোষ্ঠী থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এমনকি তাদের পেশা ব্যাতিত অন্য সম্প্রদায়ের পেশার সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা যৎসামান্য। যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে খুব দুঃখজনক। “প্রজেক্ট প্রথমা”প্রকল্পের আওয়াতায় আলোকিত শিশু ও এমপাওয়ার মি কতৃক যৌথ আয়োজিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মো. আরিফুর রহমান মাসুম, প্যানেল মেয়র (নাটোর পৌরসভা), কোহিনূর বেগম পান্না, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত নারী আসন (নাটোর পৌরসভা), লন্ডন থেকে আগত “এমপাওয়ার মি” এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা শাহ লালন, লাস্ট মাইল লাইফের ও আলোকিত শিশু’র প্রতিষ্ঠাতা মিথুন দাস কাব্য ও আরো উপস্থিত ছিলেন হরিজন সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিবর্গ।
“শিশু শিক্ষা ও নারী কর্মসংস্থান হোক সমাজ সংস্করণের প্রথম পদক্ষেপ” এই স্লোগানকে সামনে রেখে শিশু শিক্ষা এবং নারী ক্ষমতায়নের জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে “প্রজেক্ট প্রথমা নামক” প্রকল্পটি । সমাজের পিছিয়ে পরা নারীদের অগ্রততির মধ্য দিয়েই একটি সমাজ ও জাতীর উন্নয়ন সম্ভব। তাই নারীর ক্ষমতায়ন সর্বাগ্রে নিশ্চিত করা উচিৎ। লাস্ট মাইল লাইফের আলোকিত শিশু দীর্ঘদিন যাবত এই সম্প্রদায়ের মাঝে প্রায় চার বছর ধরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
উক্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ২৮.১০.১৯ তারিখে হরিজন সম্প্রদায়ের অগ্রগতির উপলক্ষ্যে উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় আনন্দ ভবনে। উক্ত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মিথুন দাস কাব্য। তিনি জানান, দীর্ঘ তিন বছর যাবত আলোকিত শিশু এই সম্প্রদায়ের বাচ্চাদের সুশিক্ষা দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন এই প্রকল্পের আওতায় তাদের জীবন ব্যাবস্থা আরোও উন্নত করতে চান। তিনি এই প্রকল্পকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও সর্বত্মক ভাবে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
“এমপাওয়ার মি” এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা শাহ লালন তার বক্তব্যে নারী ও শিশু শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের সাথে সমাজ কাঠামোর পরিবর্তন আনা সম্ভব। ইম্পাওয়ার মি প্রোজেক্টের মধ্য দিয়ে নারীরা সাবলম্বী হতে পারবে। ইম্পাওয়ার মি প্রোজেক্ট পিছিয়ে পরা দারিদ্র্য পরিবারের মাঝে আরও সেলাই মেশিন বিতরণ করা আশ্বাস প্রদান করেন।
সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর কোহিনূর বেগম পান্না নারী ক্ষমতায়নের গুরুত্ব আলোচনা করেন। তিনি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন, শেলাই মেশিন দ্বারা একজন মহিলা তার পরিবারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে। বাচ্চাদের শিক্ষামূলক কাজে সাহায্য করতে পারবে। সমাপনি বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র মো. আরিফুর রহমান মাসুদ। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, নারীদের কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ, সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য বিত্তবান কিংবা সংস্থাদের। তিনি বলেন, প্রজেক্ট প্রথমার এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসার যোগ্য। এই সংস্থা শুধু মাত্র নারীদের কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলাই নয় বরং দক্ষ জনশক্তি হিসেবেও তুলে ধরার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি এমন উন্নয়নমূলক কাজের সাথে থাকার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।
সর্বশেষে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পিছিয়ে পড়া নারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা সেলাই মেশিনের সাহায্যে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে পারবে এবং পরিবারে অর্থনৈতিকভাবে অবদান রাখতে পারবে। তাই তারা এমন একটি সংস্থার সাহায্য পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। খবর বিজ্ঞপ্তির।