নাটোর অফিস॥
জমির অবস্থান নাটোর পৌর শহরের আমহাটি মৌজা। দাম এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। সরকারি রাজস্ব প্রায় ২৫ লাখ টাকা। সেই জমি দলিলে ছাতনী ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে। ২০ লাখ টাকায় নিবন্ধন (রেজিস্ট্রি) করা হয়েছে। রাজস্ব দেওয়া হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাকি রাজস্ব সরকার হারালেও নাটোরের দলিল লেখকচক্র লাভবান হয়েছে।
সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি টাকার জমি নামমাত্র মূল্যে দলিল তৈরি করায় বিক্রেতা ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর সদর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে পৌর শহরের আমহাটির ৮১ শতাংশের একটি জমি রেজিস্ট্রি হয়। পৌরসভাধীন প্রতি শতাংশ পুকুরের জমির সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা আছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৯০৫ টাকা। কিন্তু ক্রেতা কান্দিভিটুয়ার আবুল হোসেনের ছেলে বিসমিল্লাহ বস্ত্রালয়ের মালিক শাহজাহান সরদার দলিল লেখকের সঙ্গে যোগসাজশ করেন। ইউনিয়নের জায়গা দেখিয়ে মাত্র ২০ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রি করেন। প্রকৃতপক্ষে পুকুরটি নাটোর পৌর এলাকার অন্তর্ভুক্ত। বিক্রেতা আব্দুস সালাম এক কোটি ৩০ লাখ টাকা বুঝে পেয়ে সরল মনে দলিলে স্বাক্ষর করেন। পরে দলিলের নকল তুলে তিনি দেখতে পান ২০ লাখ টাকায় দলিল সম্পাদন করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত আয়কর দেওয়ার ক্ষেত্রে বিড়ম্বনার হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি ক্রেতার নিকট থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য চলতি বছরের ২০ সেপ্টেস্বর নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর অভিযোগ করেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এর অনুলিপি জেলা প্রশাসক, রেজিস্ট্রার, সাবরেজিস্ট্রার নাটোর সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর পাঠান হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে ক্রেতা শাহজাহান সরদার বলেন, ‘নিয়ম মেনেই জমিটি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। তিনি যখন জমিটি বায়নানামা করেন তখন জমিটি পৌরসভার বাইরে ছিল। পরে পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দলিল লেখক এবং বিক্রেতা আব্দুস সালামের সঙ্গে আলোচনা করেই জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এখন কেন তিনি অভিযোগ করছেন তা আমার কাছে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।’
এ বিষয়ে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. শরীফুন্নেছা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’