নাটোরঃ আদালতে মামলা থাকা সত্বেও নাটোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শহরের পটুয়াপাড়া এলাকায় বাড়ি ভাংচুর করে প্রতিপক্ষকে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ সিরাজুল ইসলাম ছোটন ও তার পরিবার। রোববার নাটোর ইউনাইটেড প্রেস ক্লাবে এসে এমন অভিযোগ করা হয়।
সিরাজুল ইসরাম ছোটন লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রায় ৩০ বছর পূর্বে সুকুমার মন্ডল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ৬ শতক এবং তার ভায়রা সামসুল হুদা ১৯ শতক জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছিলেন। পরবর্তীতে সামসুল হুদা তার অংশের জমি অচিন্ত কুমার চক্রবর্তী ও বিউটি ভৌমিক ক্রয় করেন। গত ১০ জুলাই নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠি প্রেরন করা হয় তার বরাবরে। ওই চিঠিতে তার বিরুদ্ধে ২ ফুট ৫ইঞ্চি করে জমি সীমানা প্রাচীর দিয়ে জবর দখল করার অভিযোগ আনাসহ নিজ উদ্যোগে তা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ২৪ আগস্ট পৌর মেয়র উমা চৌধুরীর নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দা পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি অপূর্ব চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে অচিন্ত চক্রবর্তী ও বিউটি ভৌমিকের লোকজন তার বাড়ির পানির লাইন, সুয়ারেজ লাইন ও বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে জায়গা জবর দখল করে নতুন করে সিমানা প্রাচীর নির্মাণ করে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও তিনি প্রতিকার পাননি।
এসময় সিরাজুল ইসলাম ছোটনের স্ত্রী শরিফা আকতার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,অপুর্ব চক্রবর্তী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা শনিবার রাতভর তান্ডব করে। তারা শতাধিক লোক লাগিয়ে আমাদের জায়গায় জবর দখল করে নতুন প্রাচীর নির্মান করেন। তারা আমাদের প্রানে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। আমরা বর্তমানে নীরাপত্তাহীনতা এবং মানবেতর দিন কাটাচ্ছি। প্রতিপক্ষরা সবাই সরকারী দলের। এখন কার কাছে প্রতিকার চাইব? পুলিশ গিয়েও তাদের সাথেই কথাবার্তা বলে চলে যায়।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী জালাল উদ্দিন বলেন, এবিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করলেও তার নজরে আসেনি। অভিযোগ হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। তবে পৌর মেয়র বিষয়টি দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করার কথা বলেছিলেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পৌর মেয়র উমা চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে সিরাজুল ইসলাম ছোনের আমিনের উপস্থিতিতে জায়গা মাপ করে ২ শতক জমি সিরাজুল ইসলাম জবর দখল করে রেখেছেন বলে প্রমাণিত হয়। এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম ছোটনকে দু’বার নোটিশ দিয়ে জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি না করলে শনিবার বাদী পক্ষের জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আদালতে মামলা করলেও আদালত থেকে কোন ধরনের নোটিশ বা ১৪৪ জারি করা হয়নি। ফলে আইনগত কোন বাধা না থাকায় তার জবরদখল করা জায়গা প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কোন ধরনের তান্ডবের অভিযোগ সত্য নয়।