নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রামে অপহরণকারীদের হাত কামড়ে রক্ষা পেয়েছে জাহিদ হাসান (১১) নামে এক স্কুলছাত্র। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার খোদ্দকাচুটিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জাহিদ ওই গ্রামের সৌরভ আলীর ছেলে এবং জোয়াড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।
এঘটনার পর আতঙ্কে বিদ্যালয়ে ভীড় জমাতে থাকে শতাধিক অভিভাবক। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিশু শিক্ষার্থীদের নিজ দায়ীত্বে বিদ্যালয়ের পৌঁছাতে এবং ছুটির পর সাথে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন অভিভাবকদের।
জোয়াড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোদেজা বেগম জানান, জাহিদ হাসান বিদ্যালয়ে আসার পথে বাড়ির অদুরে কালো মাইক্রোবাস থেকে ৩/৪ জন তাকে জোড় করে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করে। এসময় জাহিত তাদের হাত কামড়ে দিয়ে পালানোর জন্য দৌড় দেয়। অপরদিকে থেকে জনৈক মহিলা আসলে জাহিদ তাকে ঘটনা খুলে বললে দু’জন মিলে চিৎকার শুরু করলে মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়। পরে জাহিদ স্কুলে না এসে বাড়ি ফিরে যায়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক অভিভাবক বিদ্যালয়ে এসে ভীড় জমায়। তারা নিজ নিজ সন্তানকে সাথে নিয়ে বাড়ি চলে যায়।
এসময় অভিভাবকদের পরামর্শ দেওয়া হয় তারা যেন সন্তানকে নিজ দায়িত্বে বিদ্যালয়ে পৌছে এবং ছুটির পর নিয়ে যায়। যেসকল অভিভাবক আসবেনা তাদের সন্তানকে অন্তত ৮/১০ জনের গ্রুপ করে এক সাথে বিদ্যালয়ে পাঠায়।
এদিকে জোয়াড়ী বিদ্যানিকেতন কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগম বলেন, ছেলে ধরা আতংকে স্কুলের সকল শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ডেকে তাদের হাতে সন্তানদের বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
জোয়াড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহাজাহন আলী জানান, জাহিদের বাড়িতে গিয়ে তাকে অভয় দিয়ে আসা হয়েছে। অপরিচিতদের দেখলে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য সকল শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাহিদ হাসানের বাবা সৌরভ আলী বলেন, কয়দিন থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ছেলে ধরার খবর পাচ্ছিলাম। সেটা যে আমার গ্রামে চলে আসবে বুঝতে পারিনি। এখন ছেলেকে স্কুলে পাঠানো নিয়েই আতংকে আছি। গরীব মানুষ ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গেলে কাজ করবো কখন।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলিপ কুমার দাস বলেন, জোয়াড়ী স্কুলের কোন খবর পাই নাই। তবে ছেলে ধরা একটা গুজব, এটা নিয়ে প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তবে জাহিদকে কারা নিয়ে যাচ্ছিলো, এমন প্রশ্নের কোন জবাব দেন নাই ওসি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) হারুন-অর-রশিদ বলেন, এ বিষয়ে জানা ছিল না, স্কুলের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। অভিভাবদের আতংকিত না হওয়া পরামর্শ দিচ্ছ। যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
(সংবাদে ব্যবহৃত ছবিটি প্রতীকি)