নাটোর অফিস॥ নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারী কলেজে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান কর্তৃক এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের ৩ দিন পর একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল মোত্তালেব।
তবে বিভাগের ছাত্রীরা সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী বরাবর কোন চিঠি দেননি মর্মে ছাত্রীদের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেবুনন্নেসার বিরুদ্ধে। তদন্তের প্রথমদিন বুধবার ওই বিভাগের ছাত্রীদের কলেজে ডেকে এ স্বাক্ষর নিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। এ খবর পেয়ে সাংবাদিকরা হাজির হলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষিকা জেবুন্নেসা।
তদন্ত কমিটির অনান্য সদস্যরা হলেন ইংরেজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক গোলাম মওলা খান, পদার্থ বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান ড. সলিম উল্লাহ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান রবিউল ইসলাম, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কিশোর কুমার মহন্ত, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এম এ তৌফিক।
গতকাল মঙ্গলবার(১৬ই এপ্রিল) এ কমিটি করা হয়েছে বলে কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ওইদিন রাতে স্পর্শকাতর এ বিষয়ে কমিটি গঠনের খবরে বুধবার সকালে কলেজে যাওয়া হলে কমিটির সদস্য কিশোর কুমার মহন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন। যেসব সাংবাদিকরা এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন করেছেন তাদের আগামীকাল বৃহষ্পতিবার তলব করেছে তদন্ত কমিটি।
বুধবার সকালে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে যাওয়া হলে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে একাডেমিক ভবনের বাইরে অবস্থানন করতে দেখা যায়। তারা জানায়, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেবুন্নেসা তাদের স্বাক্ষর নিয়েছেন। কেন স্বাক্ষর নিয়েছে জানতে চাইলে তারা জানান, বিভাগের ছাত্রীদের চিঠি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন সঠিক নয়- এমন দাবী জোরদার করার জন্য তাদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। বাধ্য হয়েই তারা স্বাক্ষর দিয়েছে।
যৌন হয়রানি নিয়ে জাগোনাটোর২৪ ডটকমসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কলেজ প্রশাসন নড়চড়ে বসলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত সোমবার (১৫ই এপ্রিল) কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংসদ শিমুল যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য কিশোর কুমার মহন্ত জানান, নির্ধারিত তিনদিনের মধ্য তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তথ্য দিয়ে সহযোগিতার জন্য প্রতিবেদক গণমাধ্যমকর্মীদের ডাকা হয়েছে।