লালপুরে জেঁকে বসেছে শীত, সংকট গরম কাপড়ের

নাটোর অফিস।।উত্তরের জনপদ নাটোরের লালপুর উপজেলায় অগ্রহায়নের শেষে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে চারিপাশ। গত তিনদিন যাবত শিশির ঝরছে বৃষ্টির মতো সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় হাড় কাপানো শীতে যুবথুব এই অঞ্চলের মানুষ। ঘনকুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। হাড় কাপানো শীতে গরম কাপড় ছাড়া সাধারণত কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। ঘরের মধ্যে শীতে জবুথুবু অবস্থা। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষের জনজীবন। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টাতেও দেখা মেলেনি সুর্যের আলোর।সর্বত্র ঘনকুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিলো।এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষেরা।ঘনকুয়াশার কারনে প্রধান প্রধান সড়ক গুলিতে গণপরিবহণ ছিলো কম। বেলা ১২টাতেও গণপরিবহনগুলি চলছিলো হেড লাইট জ্বালিয়ে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাজারে আসতে দেখা যায়নি। সংকট দেখা দিয়েছে গরম কাপড়ের। সরকারী গরম কাপড় না থাকায় কোন রকমে বস্তা মুড়ে দিয়ে রাত কাটাচ্ছেন ছিন্নমূল মানুষেরা।আব্দুলপুর জংশনে রাত কাটানো ছিন্নমূল ফরিদ শেখ বলেন, সিরাজগঞ্জ থেকে তিনি এখানে এসেছেন। গরম কাপড় না থাকায় কোনরকমে বস্তা মুড়ে দিয়ে রাত কাটাচ্ছেন তিনি সহ স্টেশনে বসবাসকারী অন্তত ৫০ জন ছিন্নমূল মানুষ। কোন সরকারী গরম কাপড়র পান নি তারা।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় লালপুর ও তার আশেপাশের এলাকায় সর্বনি¯œ তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গতকাল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোদ না থাকায় শীত বেশি অনুভুত হচ্ছে। তাপমাত্র আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি।
সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। রাস্তাঘাট ছিল প্রায় জনশূন্য। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ । ভ্যানচালক, রিকশাচালক, মোটরসাইকেল বা সাইকেলে চলাচল করেন তাদের জন্য কুয়াশা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহর থেকে শুরু করে গ্রাম অঞ্চলের সড়কগুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। তীব্র শীতে হাসপাতাল গুলিতে বাড়ছে শীতজনিতো রোগীর সংখ্যা।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ কে এম শাবউদ্দিন বলেন, গত তিনদিনে তীব্র শীতে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে শীতজনিত রোগর সংখ্যা। সর্দি ও কাশি নিয়ে ৬ জন ও ডায়েরিয়া রোগে ১৩ জন ভর্তি আছে। শীতে সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি শিশু ও বয়স্করা।
উপজেলার অটোভ্যান চালক শহিদুল আলী জানান, তীব্র শীতের কারনে ভ্যান চালানো যাচ্ছে না। হা-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। মানুষও শীতের কারনে ঘর থেকে বের হচ্ছে না যার কারনে ভাড়াও কমে গেছে। এখন সংসার চালানো দয় তার পরেও ভ্যান নিয়ে বের হয়েছি।
শফি আলী নামে এক কৃষি শ্রমিক জানান, কুয়াশা আর শীতের কারনে মাঠে কোন কাজ করা যাচ্ছে না। হাত পা কেটে যাচ্ছে। তার পরেও জীবিকার তাগিদে কাজে এসেছেন তিনি।
এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভীড় জমেছে পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে। শীত নিবারনে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত মানুষের ভরসা পুরাতন কাপড়েরর দামও বৃদ্ধি পেছে। সংকট দেখা দিয়েছে গরম কাপড়ের।
লালপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, এখনো লালপুর উপজেলায় সরকারী শীতবস্ত্র আসেনি। শীতবস্ত্র এলে শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, উপজেলায় এখনো সরকারী শীত বস্ত্র আসেনি । শীতবস্ত্র এলে শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *