নাইমুর রহমান, নাটোর-১,২ ও ৪ আসন ঘুরে
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র, মহাজোটের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টি নাটোরের তিনটি আসনে ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকার ঘোষণা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের সাথে এবার তারাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সমানে সমানে। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে জোরেসোরে মাঠে নেমেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা।
নাটোরের চারটি আসনে দলীয় প্রতীক ‘লাঙ্গল’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীরা দলের হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবেই পরিচিত। নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে দলের কেন্দ্রিয় ভাইস-চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য শিল্পপতি আবু তালহা, নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা সভাপতি মজিবর রহমান সেন্টু, নাটোর-৩(সিংড়া) আসনে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি প্রকৌশলী আনিসুর রহমান ও নাটোর-৪(গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে জাপার কেন্দ্রিয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মৃধা।
চারটি আসনে জাপার প্রার্থীদের মধ্যে নাটোর-৩ আসনের জাপার প্রার্থী আনিসুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বীতা থেকে সরে এসে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জুনাইদ আহমেদ পলককে সমর্থন দিলেও বাকী ৩টি আসনের প্রার্থীরা অনড় অবস্থানে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সাথে পাল্লা দিয়ে তারা পোস্টারিংয়, মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। আবার প্রচার প্রচারণায় বাধা ও হামলার অভিযোগ এনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রার্থীকেও অভিযুক্ত করছেন।
নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে দলের কেন্দ্রিয় ভাইস-চেয়ারম্যান শিল্পপতি আবু তালহা এ আসনের সাবেক সাংসদ। তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। কোন দলের নেতাকর্মীদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করিনি। নিজ দলের পাশাপাশি বিএনপি ও আওয়ামী লীগে ভোট ব্যাংক আছে আমার। সেটি আসন্ন নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনে দল মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সেন্টু এ আসন থেকে টানা দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির বিপুল কর্মী-সমর্থক রয়েছে। বড় দুই দলের রাজনৈতিক উৎপাতে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ, তারা জাতীয় পার্টির প্রতি আস্থাশীল। অন্য দলের মতো আমাদের টাকা বা পেশিশক্তি নেই। আমাদের প্রতি মানুষের আস্থাই আমাদের ভোট ব্যাংক। সুযোগ পেলে মানুষ আমাদের বেছে নেবে।’
নাটোর-৪(গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে জাপার কেন্দ্রিয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক শিল্পপতি আলাউদ্দিন মৃধা। নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন সময় দুর্বৃত্তের দ্বারা তিনি ও তার সমর্থকরা হামলার শিকার হয়েছেন দাবী করে আলাউদ্দিন মৃধা বলেন, ‘বাধা সত্বেও আমার ব্যক্তিইমেজ এ আসনে দলীয় বিজয়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় জাপার কর্মী সমর্থকরাও নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। সাধারণ মানুষ জাপার প্রতি আস্থা রেখেছে। আমরা বিশ্বাসী, এ আসনটি দলকে উপহার দিতে পারবো।’
তবে ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তোজা আলী বাবলু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে আমরা গুরত্ব দিচ্ছি না। জনগণ নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আমরা আচরণবিধি মেনেই নৌকায় ভোট দিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছি।’
জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে ভোটের দিন বিএনপি প্রার্থী ও ভোটারদের উপস্থিতির উপর নির্ভর করছে লড়াই আওয়ামী লীগ-জাপার লড়াই।