নাইমুর রহমান, চারটি আসন ঘুরে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাঁচদিন বাকী থাকলেও নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে আওয়ামী লীগের দাপটে এখনও কোণঠাসা বিএনপি। একসময় নাটোরকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে মনে করা হলেও বিগত ৫ বছরে বদলেছে সেই ধারণা। নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী মাঠে। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থীরা প্রচারণার শেষদিকে এসেও সুবিধা করতে পারছেন না। তাই জেলার ৪টি সংসদীয় আসনেই অনেকটাই নিশ্চিত বিজয়ের পথে আওয়ামী লীগ।
নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া): এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনকি সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বকুল। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের সহধর্মীনি অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরীন। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় ভাইস চেয়ারম্যান আবু তালহা। এ আসনটিতে এখনও ধানের শীষের প্রার্থী কে, তা নিয়ে আদালতে লড়াই চলায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল।
নাটোর-২(সদর-নলডাঙ্গা):জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর সহধর্মিনী সাবিনা ইয়াসমিন। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবর রহমান সেন্টু। এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে তেমন প্রচারণা চোখে পড়ছে না এখনও। তবে শুরু থেকে নিজের প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ করে আসছেন সাবিনা ইয়াসমিন। এখানেও সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শিমুল।
নাটোর-৩(সিংড়া): চলনবিল অধ্যুষিত এ আসনে চতুর্থবারের মত দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তার বিপরীতে রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দাউদার মাহমুদ। দাউদার মাহমুদ প্রচারণা শুরুর বেশ কয়েকদিন মাঠে থাকলেও শেষদিকে তা কমিয়ে দিয়েছেন। লাঙ্গল নিয়ে মাঠে আছেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি প্রকৌশলী আনিছুর রহমান। সম্প্রতি পলককে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে এসছেন বিকল্পধারার প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম হাসু। ফলে নির্বাচনে পলকের বিজয় এখন অনেকটাই নিশ্চিত।
নাটোর-৪(গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম): এ আসনে সপ্তমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস। তার প্রতিদ্বন্দ্বী গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ। এখানে লাঙ্গল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় কমিটির নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন মৃধা। এ আসনটি আওয়ামী লীগের ‘কনফার্ম সিট’। কাজেই এখানে যিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন তিনিই বিজয়ী হন বলে প্রচলন আছে।
বিগত দুই সপ্তাহে নাটোরের ৪টি আসনে বড় দুই দলের প্রচারণা ও সামগ্রিক কার্যক্রম বিশ্লেষণে দেখা যায় আওয়ামী লীগ ভোটের মাঠে থাকলেও সিদ্ধান্তহীনতা ও প্রচারণায় বাধাদানের অভিযোগে বিএনপি স্বাভাবিক প্রচারণা থেকে অনেক দূরে। শেষ দিনগুলোতে প্রচারণায় নির্ধারণ হবে কারা হতে চলেছেন নাটোরের ৪টি আসনের আগামী দিনের সংসদ প্রতিনিধি।