নাটোর অফিস॥
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিত হওয়া বাসন্তী পুজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মেতেছিল এক ভিন্ন সাজে। শুক্রবার সন্ধ্যার পরে উপজেলার ইউএনও পার্ক সংলগ্ন বড়াল নদীর ঘাটে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বাসন্তী পুজা। দেবীকে বিদায় জানানোর আগে শেষবারের মতো উৎসবে মেতে উঠেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শেষ মুহূর্তে দেবীর আরাধনায় ব্যস্ত ছিলেন অসংখ্য ভক্ত। এরই মাঝে চলছিল রঙ খেলার উৎসব। পূজা শেষে ভক্তরা একে অপরের কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেন এবং গালে গালে কেটে দেন রঙের আচড়, শুক্রবার এমন এক দৃশ্য দেখা পড়ে বাগাতিপাড়া ইউ এন ও পার্ক সংলগ্ন বড়াল নদীর ঘাটে।
বাগাতিপাড়ার শ্রী শ্রী শ্যামা কালীমাতা কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি শুভাশীষ গারোদিয়া ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ মহন্ত জানান,সর্ব মঙ্গলময়ী,শক্তিরূপিনী,কল্যাণময়ী,শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গামাতার রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার মনস্থির করে। এর প্রেক্ষিতে শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ যুব সংঘের সভাপতি অনন্ত মহন্ত ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় আগরওয়ালার আয়োজনে গত ১৪ই এপ্রিল(পহেলা বৈশাখ) থেকে ১৮ ই এপ্রিল পর্যন্ত ৫ দিন ব্যাপি বাসন্তী দুর্গাপূজার আয়োজনকরা হয়। ১৯ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যার পরে বিসর্জন করা হয়।
আয়োজক সঞ্জয় আগরওয়ালার জানান,বাগাতিপাড়ায় এই প্রথম বাসন্তী দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয় । এরকারনে শুধু বাগাতিপাড়ার মানুষ নয় পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলারও অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তদের দেখেছি মায়ের আরাধনা করতে এসেছেন। এছাড়া অন্যান্য জেলা থেকেও আসেন ভক্তরা।
কুষ্টিয়া থেকে আগত মিন্টু কুমার বোস্বামী পুরোহিত জানান, হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী হারানো রাজ্য ফিরে পেতে সুরথ রাজা দুর্গা দেবীর আরাধনা করেছিলেন বসন্তকালে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সেই বিশ্বাস থেকে অশুভ শক্তিকে পরাভূত করতে বসন্তকালে বাসন্তী পূজার আয়োজন করেন। দেবী দুর্গাকে হেমন্ত ঋতুতে পূজা করার রীতি রয়েছে। দেবীকে তখন কাত্যায়নী নামে পূজা করা হয়। শারদীয় দুর্গাপূজার মতো এসব পূজাতেও ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী শেষে দশমীতে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়। এটা তারা করে থাকেন কল্যাণের জন্য, রোগশোক থেকে মুক্তির জন্য। তিনি আরো জানান বাগাতিপাড়ায় তিনি ভক্তদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন।