নাটোর অফিস ॥
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন,দেশে বর্তমান বিদ্যমান ৯ হাজার ৩৮৫টি সেবাকে ২০২৪ সালে এক হাজারে উন্নীত করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টার এক একটি স্মার্ট সার্ভিস হাবে পরিণত হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। ম্যাজিক্যাল মিরাকেল হিসেবে পরিণত হয়েছে। বিএনপির সময়ে সন্ত্রাস এবং দুর্নীতি ছাড়া কিছুই উপহার দিতে পারেনি। আমরা যেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করি।
আজ শনিবার সিংড়ার হাই-টেক পার্ক চত্বরে ডিজিটাল সেন্টারের ১৩ বছর পূর্তি উদযাপন এবং বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস এন্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ও হার পাওয়ার প্রকল্পের অধীনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় নাগরিক সেবা হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেওয়ার অভিপ্রায়ে ২০০৮ সালে ‘রুপকল্প-২০২১’ নামে তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। এরই ধারবাহিকতায় ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর সারদেশের সকল ইউনিয়নে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। ২০১৩ সালে সকল পৌরসভায় পৌর ডিজিটাল সেন্টার ও সিটি কর্পোরেশনে নগর ডিজিটাল সেন্টার, ২০১৮ সালে বিশেষ জনগোষ্ঠির চাহিদার আলোকে স্পেশালইজড ডিজিটাল সেন্টার এবং সৌদি আরবে প্রবাসীদের জন্যে এক্সপাট্রিয়েট ডিজিটাল সেন্টার এবং ২০২৩ সালে গ্রাম পর্যায়ে ভিলেজ ডিজিটাল সেন্টার এর কার্যক্রম চালু করা হয়। এসব ডিজিটাল সেন্টারে দ্রুততম সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে নাগরিক সেবা প্রদানকে সহজলভ্য করা হয়েছে। প্রতিমাসে এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে ৭৫ লক্ষের অধিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এরফলে সেবা গ্রহীতাদের ৭৮.১৪ শতাংশ সময়, ১৬.৫৫ শতাংশ ব্যয় এবং ১৭.৩৮ শতাংশ যাতায়াত খরচ সাশ্রয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারসমূহ তৃণমূল থেকে কাজ শুরু করে। অর্থাৎ শিকড় থেকে শিখরে পৌঁছে যাবার দৃঢ় প্রত্যয়।
তিনি বলেন, ফিলিপাইনের বাংসোমারো প্রদেশে আমাদের দেশের ডিজিটার সেন্টারের আদলে ১০৫টি ওয়ান স্টপ সেন্টার প্রতিষ্ঠায় আমরা কাজ করেছি। বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা, ঘানা, কম্বোডিয়াতেও ক্রস বর্ডারের মাধ্যমে এই মডেল রেপ্লিকেট করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০২৪ সালের মধ্যে গ্রাম পর্যায়ে এক হাজার ভিলেজ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হবে। সারাদেশে স্থাপিত হাই-টেক পার্কসহ তথ্য প্রযুক্তির স্থাপনাগুলো তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানে মুখর হয়ে উঠেছে। আমরা দেশের ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এসব সেন্টারে ১০ লক্ষ তরুণ-তরুণীর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং এসব সেন্টারে পাঁচ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হবে।
জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এটুআই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মামুনুর রশীদ ভূঞা, পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলাম, এটুআই প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাজেদুল ইসলাম, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মোঃ জান্নাতুল ফেরদৌস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা খাতুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শেখ ওহিদুর রহমান, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সফল উদ্যোক্তা নীলা চৌধুরী প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল থেকে অনলাইনে সিংড়া উপজেলার ৩৬টি উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন এবং আটটি উন্নয়ন কার্যক্রমের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।