নাটোরঃ নাটোরের সিংড়ায় শিশু জুয়েলকে(৮) হত্যা করে মৃতদেহ মাটির নীচে কচুরিপানা দিয়ে লুকিয়ে রাখার পরিকল্পনায় ছিলো নিজ মামা হিরা(২৫) ও চাচা মণি সরকার(৩৫)। তাদের নির্দেশেই জুয়েলকে হত্যা করে একই এলাকার শ্রি দ্বিজেন(২০)।
আলোচিত এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের ২২ দিনের মধ্যে মূল আসামী শ্রি দ্বিজেনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক এসব তথ্য।
পুলিশ জানায়, নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের কুমগ্রাম মসুরাপাড়া গ্রামের কৃষক মুক্তার সরকারের জমি বিক্রির ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা যে কোন উপায়ে আদায়ে প্রধান আসামী দ্বিজেনকে সাথে নিয়ে শিশুপুত্র জুয়েলকে অপহরণের পরিকল্পনা করে তার মামা হিরা, চাচা মণি সরকার। এরই অংশ হিসেবে গত ২৬ শে অক্টোবর সন্ধ্যায় জুয়েলকে বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার পাশে থেকে তুলে নেয় তারা। এ সময় জুয়েলের মুখ গামছায় বেঁধে নিয়ে যাওয়ার ছটফট করতে থাকে জুয়েল। তখনি শ্বাস আটকে মৃত্যু হয় তার। বিষয়টি টের পেয়ে তারা তিনজন আলোচনা করে জুয়েলের মৃতদেহকে তারই বাড়ির অদূরে খাল সংলগ্ন একটি ব্রিজের নিজে মাটিতে পুঁতে কচুরিপানা দিয়ে চাপা দেয়। নিখোঁজের দুদিন পর ওই স্থান থেকে পুলিশ শিশু জুয়েলের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে দ্বিজেন আদালতে ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত জবানবান্দিতে জুয়েলের মামা ও চাচার জড়িত থাকার কথা জানালে তার দেয়া তথ্যানুযায়ী শুক্রবার দিবাগত রাতে দুজনকে গ্রেফতার করে সিংড়া থানা পুলিশ। এ নিয়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
শনিবার দুপুরে নাটোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন। তিনি বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করে। বর্তমানে মূল আসামী কারাগারে এবং বাকী দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসপি হেডকোয়ার্টার আবু হায়দার ফয়জুর রহমান, সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নেয়ামুল আলম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল মজিদ প্রমুখ।