নাটোর অফিস ॥
দুটি সাপ বা সাপ-বেজির লড়াই দেখেছেন অনেকে। বিভিন্ন ডোবা নালা ও পুকুরে সচারচর দেখা যায় বিষাক্ত দুই সাপের লড়াই সহ মধুর আলিঙ্গন। কিন্তু গুঁই সাপের লড়াই বা কুস্তি নজরে পড়েনা সচারচর। তবে এবার নাটোরের নলডাঙ্গায় দুটি গুই সাপকে কুস্তি করতে দেখা গেছে। সোমবার উপজেলার তৈরাপাড়া এলাকায় বিরল এই দৃশ্য দেখতে শত শত মানুষ ভিড় জমান।
এলাকাবাসী জানায় সোমবার সকালে নলডাঙ্গা তৈরাপাড়া এলাকায় রেলওয়ের সংলগ্ন খালের পানিতে হঠাৎ দুটি গুই সাপকে মাথা উঁচু করে কুস্তি করতে দেখা যায়। প্রথমে গ্রামের এক তরুণ ওই কুস্তির দৃশ্যটি দেখতে পান। পরে দুটি গুই সাপের মধ্যেকার লড়াই বা কুস্তির খবর আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকার সব বয়সী মানুষ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভির করেন। প্রায় ঘণ্টা ব্যাপী চলে গুই সাপের কুস্তি। সাপ দুটি অনেকটা নাচের তালে তালে একে অপরকে জাপটে ধরে কুস্তিতে লিপ্ত থাকে। পানি থেকে প্রায় এক ফুট উঁচুতে দেহ তুলে ধরে তারা এই কুস্তিতে মেতে ওঠে। মানুষের উপস্থিতি টের পেয়েও সাপ দুটি সরে যায়নি। তবে আশপাশের লোকজনও তাদেরকে বিরক্ত করেনি। ঘন্টাব্যাপী চলে এই লড়াই। এক সময় তাদের কুস্তি শেষ হয়। এরপর সাপ দুটি চলে যায়।
এলাকাবাসী জানান,অন্য সাপের লড়াই তারা দেখেছেন একাধিকবার। কিন্তু গুই সাপের লড়াই বা কুস্তি করতে দেখেননি কখনও।
আজিম উদ্দিন নামে এলাকার এক প্রবীন ব্যক্তি বলেন , এর আগে তিনি কখনো গুঁই সাপের লড়াইয়ের এমন দৃশ্য দেখেনি। দীর্ঘ সময় ধরে সাপের এই লড়াই তিনি উপভোগ করেছেন।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক ও স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ বাংলার সাধারন সম্পাদক ফজলে রাব্বী বলেন,গুইসাপরা সহজাত ভাবে টেরিটোরিয়াল। টেরিটোরি রক্ষা করতে গিয়ে মাঝে মাঝে তারা যুদ্ধে জড়িয়ে যায়। তারা আসলে এক জোড়া পুরুষ সাপ কুস্তি করেছে। যে গুইসাপ অন্য সাপকে মাটিতে ঠেলে দেয় সে বিজয়ী হয়। প্রকৃতপক্ষে গুইসাপ কোনো সাপই নয়। এর কোনো বিষও নেই,মানুষকে দংশনও করে না। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী গুইসাপ সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা, শিকার বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে হালতিবিল অধ্যুষিত এই এলাকায় এধরনের কুস্তি এলাকার মানুষদের নজরে আসেনি কখনও। তাই গুই সাপের কুস্তি বা লড়াই দেখতে মানুষ ভির করে উপভোগ করেছেন।