নাটোর অফিস॥
সূদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মোঃ আসাদ আলী (৫৫) নামের এক কৃষককে শিকলবন্দী করে রাখার অভিযোগ উঠেছে সুদে ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ হোসেন (৩৫) এর বিরুদ্ধে। শনিবার সকাল থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই কৃষককে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মশিন্দা বাহাদূরপাড়া গ্রামে। সুদে ব্যবসায়ী আব্দুল আজীজ তার নিজ বসত বাড়ির বারান্দায় কৃষক আসাদ আলীকে শিকলবন্দী করে রেখেছেন।
শিকলবন্দী কৃষক আসাদ আলী বলেন,‘গত তিন বছর পূর্বে আমি ৮০ হাজার টাকা জমি লিজ ভিত্তিতে সূদে করে নিয়েছিলাম আব্দুল আজিজের কাছ থেকে। গত দুই বছরে ২০ হাজার টাকা সুদ এবং আসল ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি তাকে। বাকি ৫০ হাজার টাকা এ বছর দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই একটি দুর্ঘটনায় আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়ে যাই। সংসারে স্ত্রী ও দুই মেয়ে আছে। একটি ছেলে ছিলো সে বাড়িতে থাকেনা। আমার উপার্জনে সংসার চলে। অভাবগ্রস্ত্র হয়ে যাওয়ায় আব্দুল আজিজের পাওনা বাকি টাকা গুলো দিতে বিলম্ব হচ্ছিলো। শনিবার সকালে আব্দুল আজিজ ও তার বাবা আফজাল হোসেন এবং সঙ্গে কয়েকজনকে নিয়ে আমার বাড়িতে যায়। আমি বাড়িতে শুয়ে ছিলাম। আনুমানিক সকাল ৮টার সময় আমাকে জোড়পূর্বক হাত পা বেঁধে তারা তুলে নিয়ে আসে। এরপর আব্দুল আজিজের বসত বাড়ির বারান্দায় মাজায় শিকল পড়িয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। টাকা না দিতে পারলে আমাকে ছেড়ে দিবেনা। আমার এখন এই মুহুর্তে টাকা দেওয়ার সামথ্য নেই। তারা আরও বলেছে যে, টাকা না দিতে পারলে হাত পা ভেঙে ফেলবে।
কৃষক আসাদের স্ত্রী শাহানার খাতুন মুঠোফনে বলেন,‘তার স্বামী বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলো। আব্দুল আজিজসহ তার লোকজন এসে জোড়পূর্বক হাত পা বেঁেধ তুলে নিয়ে শিকলবন্দী করে রেখে তাকে ফোন দিচ্ছে টাকা দিয়ে তার স্বামীকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসার জন্য। তার পরিবারের এখন টাকা দেওয়ার মত সামর্থ্য নেই। কৃষক স্বামীকে নিয়ে তিনি ও তার পরিবার দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলেও জানান।
সুদে ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ বলেন,‘অনেকদিন পাওনা টাকা ফেরত চেয়েও পাইনি। তাই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে শিকলবন্দী করা হয়েছে যেন পালিয়ে যেতে না পারে। টাকা পরিশোধ করলে শিকলমুক্ত করে ছেড়ে দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাঃ মনোয়ারুজ্জামান বলেন,‘এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ কেউ জানায়নি। এখনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।