নাটোর অফিস ॥
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় নব নির্মিত ফায়ার স্টেশনের মাধ্যমে সুফল পেতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বামুনগ্রাম গ্রামে মোঃ হালিম মিয়া নামে এক ব্যক্তির বসতবাড়িতে লাগা আগুন নিভানোর মধ্য দিয়ে প্রথম কার্যক্রম শুরু করলো নলডাঙ্গা ফায়ার স্টেশন। সেখানে দুইটি ইউনিটে ১০ জন ফায়ারকর্মী তাদের দুইটি গাড়ি নিয়ে হাজির হয়ে মুহুর্তের মধ্যে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এসময় তারা প্রায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল উদ্ধার করেছেন। তবে অগ্নিকান্ডের কারনে প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নলডাঙ্গা ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর মোঃ মেহেরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বামুনগ্রাম গ্রামের লেবু মিয়ার ছেলে হালিম মিয়ার বসতবাড়িতে আজ দুপুরের দিকে রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়। একই সঙ্গে মুগুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে একটি বসত ঘর, রান্না ঘর ও খড়ের গাদা পুড়ে ভষ্মিভুত হয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে দুইটি গাড়ি নিয়ে দুইটি ইউনিট সেখানে হাজির হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং দুর্ঘটনা কবলিত স্থান থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়। আর অগ্নিকান্ডে হালিম মিয়ার প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়। তিনি বলেন, আজকের আগুন নেভানোটা ছিল নলডাঙ্গা ফায়ার স্টেশনের প্রথম কার্যক্রম। গত ৩০ আগষ্ট ১৬ জন জনবল, দুইটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ঘটনা, অগ্নিকান্ডসহ বিভিন্ন প্রকার দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল প্রকার উপকরন নিয়ে ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। এই স্টেশনে সফল ভাবে কার্যক্রম সম্পাদন করতে একজন ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর, একজন লিডার, ৩ জন ড্রাইভার, ১১ জন ফায়ার ফাইটার, একজন বাবুর্চি ও একজন ঝাড়–দার পদায়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এখানে ২৫ জন পদের বিপরীতে ১৬ জন জনবল দেয়া হয়েছে। অচিরেই আরো জনবল যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন। ইতোমধ্যে যে জনবল দেয়া হয়েছে, তা দিয়ে ফায়ার স্টেশনের সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব এবং তারা সার্বক্ষনিক প্রস্তুতও রয়েছেন।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম হাদু বলেন, নাটোর শহর থেকে নলডাঙ্গা উপজেলা সদরের দুরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। আর উপজেলার অধিকাংশ গ্রামগুলো দুর্গম ও হালতিবিল অধ্যুষিত। ফলে এই উপজেলার কোথাও কোন দুর্ঘটনা কিংবা অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে জেলা শহর থেকে ফায়ার স্টেশন কর্মীরা এসে উদ্ধার তৎপরতা ও আগুন নিভানোর কাজ করে থাকেন। তবে দুরত্বের কারনে অনেক সময় সঠিক সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতো নলডাঙ্গাবাসী। এখন বাড়ির পাশে ফায়ার স্টেশন চালু হওয়ায় আমরা খুব খুশি।
নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুস শুকুর বলেন, অনেকদিন আগেই ফায়ার স্টেশনের জমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও চালু না হওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ হয়েছিলেন। সম্প্রতি উপজেলা নির্বার্হী অফিসার, জেলা প্রশাসক এবং সংসদ সদস্যের আন্তরিক প্রচেষ্টায় নলডাঙ্গা ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে মানুষজন সুফলও পেতে শুরু করেছে। ফায়ার স্টেশন চালু হওয়ায় নলডাঙ্গাবাসী আনন্দিত ও উদ্বেলিত।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেওয়ান আক্রামুল হক জানান, ফায়ার স্টেশন চালু হওয়ায় নলডাঙ্গাবাসীর আরো একটি প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা পুরণ হলো। আশা করি নলডাঙ্গাবাসীকে আর হতাশায় ভুগতে হবে না। এখন থেকে নাটোর বা অন্য কোথাও থেকে নয়, সরাসরি নলডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সকল সেবাসমুহ মানুষের দোড় গড়ায় পৌছে দিবেন।