নাটোর অফিস ॥
নাটোরের সিংড়ায় অবৈধ ভাবে পেতে রাখা বানার বাঁধ থেকে মাছ চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আলিফ হোসেন (৬) ও এলামুল হক (৮) নামের দুই শিশুকে নৌকায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে। শনিবার উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের সারদানগর বিলে এই ঘটনা ঘটে। শিশু আলিফ হোসেন স্থানীয় সারদানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও সারদানগর গ্রামের গার্মেন্ট কর্মী আতোয়ার আলীর ছেলে। অপর শিশু এলামুল হক ওই গ্রামের নাসির হোসেন নামে তার এক আত্মীয় এর বাড়িতে বেড়াতে এসে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সারদানগর গ্রামের আওয়ামীলীগ কর্মী ইয়াকুব আলীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে সোমবার থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে এই বিষয়ে চৌগ্রাম ইউনিয়নের হুলহুলিয়া সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের বিচার দেওয়ায় ওই শিশুর পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন অভিযুক্ত ইয়াকুব আলী ও তার লোকজন। পরে রোববার রাত ১০ টায় নির্যাতনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসীরা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে সারদানগর বিলে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বানার বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে আসছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ইয়াকুব আলী ও তার লোকজন। শনিবার শিশু আলিফ হোসেন ও ওই গ্রামে বেড়াতে আসা আরেক শিশু এনামুল হককে নিয়ে বিলের পানিতে অবৈধ ভাবে পেতে রাখা বানার বাঁধ দেখতে যায়। এসময় বানার মালিক ইয়াকুব আলী ওই দুই শিশুকে মাছ চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নৌকায় বেঁধে নির্যাতন চালান। এক পর্যায়ে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নির্যাতিত শিশু আলিফের দাদা আমজাদ হোসেন বলেন, তারা অতি দরিদ্র লোক। শিশুটির বাবা-মা ঢাকার একটি গার্মেন্টেসে কাজ করেন। ছোট থেকেই শিশুটি তার কাছেই থাকে। অন্যায় ভাবে মারধর করার পর এখন গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইয়াকুব আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হুলহুলিয়া সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল তৌফিক পরশ বলেন, এভাবে দু’টি শিশুকে নৌকা তুলে মারধর একটি অমানবিক বিষয়। এখন ওই দরিদ্র পরিবারকে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এবিষয়ে শিশু আলিফের বাবা আতোয়ার আলী বাদি হয়ে সোমবার দুপুরে সিংড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দু’টি শিশুকে মারধরের সত্যতা মিলেছে। আর ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তি গা ঢাকা দিয়েছে। ইতিমধ্যে একটি লিখিত অভিযোগও পাওয়া গেছে।এঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।