নাটোর অফিস ॥
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পুকুর পাড়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মিরাজ মৃধা (২২) নামে এক যুবক নিহতের ঘটনায় পুকুর মালিক ও স্থানীয় এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের সৎ ভাই জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে নিহতের বাবা রফিক মৃধা বাগাতিপাড়া থানায় মামলা করার পর পুলিশ রাতেই জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে।
এদিকে মিরাজ মৃধা নামে ওই যুবকের মৃত্যুর বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সহ মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় চত্বরে মৃতের স্বজন ও এলাকাবাসী এই কর্মসুচিতে অংশ নেয়। তারা মিরাজ হত্যার দায়ে গ্রেফতার পুকুর মালিক জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বিক্ষোভকারীরা উপজেলা সদরের মালঞ্চি বাজারে গিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে । পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসির দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি ইউএনওকে প্রদান করে। এসময় পুকুর মালিক জাহাঙ্গীরের ফাঁসির দাবি জানান মিরাজের বাবা রফিকুল মৃধা, মা শেফালী বেগম, স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম ও বড়ো চাচা মিজানুর রহমানসহ এলাকাবাসী। পরে ইউএনও কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে ওসি (তদন্ত) শরিফুল ইসলামের আশ্বাসে ইউএনও এবং থানার ওসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন মৃতের পরিবার।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শনিবার দুপুরে পুকুর পাড়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মিরাজ মৃধা (২২) নামে এক যুবক নিহতের ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের পিতা রফিক মৃধা। শনিবার রাতে এ ঘটনায় নিহতের বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তা আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। ওই মামলা রুজুর পর পুলিশ মামলার প্রধান ও একমাত্র আসামী পুকুর মালিক জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও নীলুফা সরকার বলেন, মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিয়েছে। এবিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে উপজেলার স্যান্যালপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুল সরকারের ছেলে স্থানীয় এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের সৎ ভাই জাহাঙ্গীর আলমের পুকুরের ধারে ঘাস কাটতে যায় ওই গ্রামের মধ্যপাড়ার রফিক মৃধার ছেলে মিরাজ মৃধা। ঘাস কাটার এক পর্যায়ে পুকুরে ধার দিয়ে জিআই তারের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া তারের সাথে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায় মিরাজ। এই ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বভাবিক হয়। এঘটনায় মামলা হলে পুলিশ জাহাঙ্গিরকে গ্রেফতার করে।