জাগোনাটোর রিপোর্ট॥
এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে নাটোর সদর উপজেলার আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া মামুন হোসেন এবং জিপিএ-৫ পাওয়া রনি মোল্লা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। একই গ্রামের দরিদ্র পরিবারের এই দুই মেধাবী মামুন ও রনি স্কুলের লেখাপড়া সহ সংসারের খরচ যোগান দিতে দিন মুজুরি করেছে। ছনের বেড়ার বাড়িতে বিদ্যুত বাতি ছিলনা পরীক্ষার সময়। প্রতিবেশী সহ স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় লেখাপড়া করেছে তারা। রনির বাবা আলেক মোল্লা ক্ষুদ্র সবজি ব্যবসায়ী। মা নুর বানু বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। ৩ ভাইবোন সহ ৫ জনের সংসারে অভাব অনটন ছিল নিত্য দিনের। তাই রনিকে মাঝে মধ্যেই দিনমজুরি করতে হয়েছে। অপরদিকে মামুন হোসেনের বাবা নিজাম হোসেন ও মা জয়নব বেগম দিনমজুর। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত দিন কাটে তাদের। মামুনের বাড়িতেও বিদ্যুত নাই । এই দুই পরিবারের বাবা-মা সহ অন্য সদস্যরা ভাল ফলাফল করায় মহা খুশী। কিন্তু সন্তানদের স্বপ্ন পুরনের সামর্থ তাদের নেই। এখন দুঃচিন্তা ভর করেছে মেধাবী সন্তানদের কিভাবে লেখাপড়া করাবে। যাদের বসবাসের জন্য ভালো কোন ঘর নেই, ঘরে বিদ্যুতের আলো নেই, খাবার নেই, সন্তানের প্রয়োজন মতো বই, পোষাক নেই সেখানে কি করে উচ্চ শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করবেন সেই চিন্তায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন তারা।
আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুল ইসলাম জানান, তারা দুজনেই মেধাবী। উচ্চ শিক্ষা পেলে তারা এলাকার সুনাম বয়ে আনবে। স্কুল থেকে বই পুস্তক ছাড়াও বিনা খরচায় প্রাইভেট পড়ানো হয় তাদের। পরিবারের পক্ষে তাদের আর লেখাপড়া করানোর সামর্থ নেই। বৃত্তবান ও হৃদয়বান মানুষেরা যদি তাদের পাশে দাঁড়ান তবেই তারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে স্বপ্ন পুরুন করতে পারবে।