নাটোর অফিস॥
নাটোরে পাট খাতের উন্নয়ন বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণে চাষী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সমাবেশে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ‘উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্প’র প্রকল্প পরিচালক দীপক কুমার সরকার।
সভায় বক্তারা বলেন, সোনালী আঁশের বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে চাহিদার শতকরা ৯০ শতাংশ কাঁচা পাট এবং শতকরা ৬০ শতাংশ পাটজাত পণ্য রপ্তানী করে সর্বোচ্চ পাট রপ্তানীকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। দেশের জাতীয় রপ্তানী আয়ে একক কৃষি পণ্য হিসেবে পাট খাতের অবস্থান দ্বিতীয় এবং মোট জিডিপি’র অবদান ৪.৮৬ শতাংশ। দেশের ৪০ লক্ষ জনগোষ্ঠি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাট চাষের উপর নির্ভরশীল এবং মোট জনশক্তির এক-তৃতীয়াংশ বিভিন্নভাবে পাট ও পাট পণ্যের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপনন কর্মকান্ডে জড়িত।
বক্তারা আরো বলেন, পাট খাতের উন্নয়নে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে ইতোমধ্যে ১৯টি পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। বর্তমানে পাট থেকে কম্পোজিট জুট টেক্সটাইল, ভিসকস, চারকোল, গ্রীণ টি, পাটের পলিথিন ইত্যাদি উৎপাদনের মাধ্যমে পাটের বৈচিত্রকরণ এবং সমৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সমৃদ্ধি অর্জন আরো জোড়দার হবে বলে বক্তারা আশা প্রকাশ করেন।
দেশে প্রতিবছর সাড়ে চার হাজার টন পাট বীজের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনের মাত্র ২০ শতাংশ পাট বীজ উৎপন্ন হয়-যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। নাটোরের পাঁচটি উপজেলাসহ দেশের ১৫৪টি উপজেলায় পাট বীজ উৎপাদনে প্রণোদনা প্রদান করছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
সমাবেশে নাবী পাট বীজ উৎপাদনকারী তিন শ্রেষ্ঠ কৃষক নাটোরের রুহুল আমিন, লালপুরের সাজদার রহমান ও বড়াইগ্রামের ফাতেমা বেগম এবং পাট বীজ উৎপাদনকারী চার কৃষক নাটোরের কামাল মন্ডল, লালপুরের আসলাম আলী, বড়াইগ্রামের মোঃ ইব্রাহীম এবং বাগাতিপাড়ার আব্দুল হান্নানকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) নাদিম সারওয়ার এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, পাট অধিদপ্তরের পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন জুয়েল ও মুখ্য পরিদর্শক মোঃ হাফিজুর রহমান, নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন ও সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন এবং কৃষকবৃন্দ।
উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণে পাট চাষী সমাবেশের আয়োজন করে যৌথভাবে জেলা প্রশাসন ও পাট অধিদপ্তর।