নাটোর অফিস॥
নাটোরের গুরুদাসপুরে গনেশ চন্দ্র মুন্ডারী নামে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদিবাসী এক কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বসলেও অভিযুক্ত প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকায় বিচার না পেয়ে এখনও বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য গণেশ চন্দ্র মুন্ডারী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের বৃগরিলা এলাকার মৃত সুধির মুন্ডারীর ছেলে। প্রাথমিকভাবে গণেশ বগুড়া রেঞ্জের অধীনে ব্যাটালিয়ন পুলিশ সদস্য হিসেবে পাবনার রুপপুর ইপিজেড এলাকায় কর্মরত আছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, প্রায় তিন-সাড়ে তিন বছর আগে গণেশ মুন্ডারীর সাথে একই উপজেলার ধানুড়া কোলা গ্রামের এক আদিবাসী ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে। পরে তাদের সম্পর্ক আরো গভীর হলে অভিযুক্ত গনেশ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীর সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরই এক পর্যায়ে শারীরিক সম্পর্ক করার সময় আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের আটক করে। ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, আপত্তিকর অবস্থায় আটকের পর গনেশ ভুক্তভোগীর পরিবারকে ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং কোন প্রকার অভিযোগ না করার অনুরোধ করে। এছাড়া মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সর্বশেষ পুলিশের নিয়োগের সময় গনেশকে ৩ লক্ষ টাকা দেয় বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবার। কিন্তু পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর গনেশ ওই ছাত্রীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে থানায় অভিযোগ করতে গেলে সে সময় অভিযোগ নেয়নি বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা। এ অবস্থায় উপযুক্ত বিচারের পাওয়ার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে দরিদ্র ভুক্তভোগী ও তার পরিবার। এছাড়া মেয়ের ভবিষ্যৎ ও সামাজিক অসম্মান নিয়ে নাজেহাল অবস্থার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা।
ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা ও মা জানান, গনেশ আমার মেয়ের সাথে প্রতারণা করেছে। তার জীবন ও সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। প্রশাসনের সহযোগীতা চেয়েও পাচ্ছি না। এই অবস্থায় আমি সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানান, দীর্ঘদিন ধরে গনেশ আমার সাথে ভালবাসার অভিনয় করেছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সর্বনাশ করেছে। চাকরী পাওয়ার পরে সে এখন আমাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এর সঠিক বিচার প্রার্থনা করছি।
প্রতিবেশী আশরাফুল ইসলাম জানান, প্রায় এক বছর আগে গণেশকে ওই ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে স্থানীয়রা। সেসময় গনেশ কান্নাকাটি করে এবং চাকুরী হারানোর অনেক আকুতি ও বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়টি ওই সময় থানা পুলিশকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গনেশ চন্দ্র মুন্ডারীর সাথে তার নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে