প্রতিনিধি, বাগাতিপাড়া॥
ফসল বিনষ্টের প্রতিররোধে চার গ্রামের কৃষকদের নিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এ নিয়ে ফসল রক্ষায় ওই কমিটি এলাকায় সচেতনতামুলক মাইকিং করে। পরদিন সকালে দেখা যায়, প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দেড় বিঘা জমির পটলের গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বত্তরা। একই রাতে একই মাঠে আরও তিন কৃষকের আমের চারা গাছও কেটে বিনষ্ট করে তারা।
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় উপজেলার পাকা ইউনিয়নের তকিনগর মাঠে গতকাল রোববার গবীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর আগেও একাধিকবার ওই মাঠে গাছ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটলেও জড়িতদের কাউকেই চিহ্নিত করা যায়নি। তবে পুলিশের দাবী, এসব ঘটনায় ইতোপূর্বে ভুক্তভোগী কৃষকরা কোন লিখিত অভিযোগ করেননি।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও স্থানীয়সুত্রে জানা যায়, ফসলের মাঠে গবাদিপশু চরিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করা হয়। এসব বন্ধে স্থানীয় চকগোয়াশ, চকতকিনগর, বেগুনিয়া ও দিয়াড় গ্রামের কৃষকরা গত ৩০ এপ্রিল একটি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে। বেগুনিয়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দীকীকে সভাপতি ও চকতকিনগর গ্রামের তনু মোল্লাকে সাধারন সম্পাদক করে ১০৫ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। গত শনিবার বিকালে সাদিমারি বটতলা বাজারে ওই কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিং করা হয়। এতে স্থানীয়দের গরু, মহিষ, ছাগল চরিয়ে গাছপালা বা ফসলের ক্ষতি সাধন না করার অনুরোধ করা হয়। এছাড়াও সন্ধ্যার পর কোন আমবাগানে বহিরাগতদের প্রবেশ না করারও অনুরোধ জানানো হয়।
প্রতিরোধ কমিটির মাইকিংয়ের পর ওই রাতেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক তনু মোল্লার দেড় বিঘা জমির পটলের গাছ ও চারটি আমের চারা গাছ, কৃষক আলিম ও আফছারের আমের চারা গাছ কেটে ফেলে করে দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও আমচাষী শহিদুলের বাগানের প্রায় দুই মণ আম পেড়ে নষ্ট করে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগ ক্ষতিগ্রস্থ মাঠ পরিদর্শন করেছেন।
কমিটির সাধারন সম্পাদক ক্ষতিগ্রস্থ তনু মোল্লা জানান, তার দেড় বিঘা জমির পটলের গাছের গোড়া কেটে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেছে দুর্বৃত্তরা। এর আগেও দু দফায় তার নতুন বাগানের ৫৮২টি চারা আম গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। কয়েক বছর থেকেই এ মাঠে অনেকের বাগানের আম গাছ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকেই ধরা যায়নি।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমাইয়া শারমিন বলেন, জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগাতিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফসল বিনষ্টের ঘটনায় তিনি কোন অভিযোগ পাননি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে এর আগেও বারবার এমন ঘটনায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন লিখিত অভিযোগ ইতোপূর্বে পাওয়া যায়নি।