নাটোর অফিস ॥
নাটোরে বন্ধু সোহাগকে খুনের দায়ে জসিম উদ্দিন (২২) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। ধার নেয়া মাত্র ১৫শ টাকার জন্য সোহাককে খুন করে জসিম উদ্দিন। সোমবার নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দীন এই রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত জসিম উদ্দিন সদর থানার হয়বতপুর চৌরি গ্রামের বকুল মিয়ার ছেলে। নিহত সোহাগ মিয়া একই গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, জসিম উদ্দিন তার বন্ধু একই এলাকার সিরাজ মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়ার কাছ থেকে ১৫শ’ টাকা ধার নিয়ে জুয়া খেলে হেরে যায়। পরবর্তীতে ওই টাকার জন্য সোহাগ চাপাচাপি শুরু করলে জসিম উদ্দিন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় সোহাগকে বাড়ির পাশের একটি পুকুরপাড়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করে। লোকমুখে সোহাগের স্বজনরা জানতে পারেন যে, সদর থানার লক্ষ্মীপুর পশ্চিমপা[ড়া গ্রামের জনৈক দরবেশ আলীর পুকুর পাড়ে একটি আম গাছের নিচে সোহাগে রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে সেহাগের মা সাজেদা বেগম ও তার চাচা আব্দুল মান্নানসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে যান। এসময় জসিমও লাশ দেখতে অন্যদের সাথে সেখানে যায়। সোহাগ মিয়ার পেটের নাড়িভুড়ি বের করে দেওয়া রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় সজনরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় সোহাগের বাবা সিরাজ মিয়া বাদি হয়ে নাটোর সদর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক আকরামুল ইসলাম তদন্ত শেষে সোহাগ মিয়ার বন্ধু জসিম উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে সোমবার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দীন অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিতের আদেশ দেন । এ সময় জসিম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) সিরাজুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।