নাটোর অফিস॥
নাটোরের নলডাঙ্গায় যুবলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে মালেক ব্যাপারি নামের এক ইউপি সদস্যকে শালিস বৈঠকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার বাঁশিলা গ্রামে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহত ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে নলডাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এসময় দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আহত ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক ব্যাপারি (৪৭),তিনি উপজেলার বাঁশিলা গ্রামে বাসিন্দা ও মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওর্য়াড সদস্য এবং মাধনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য। তবে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দ এই ঘটনার সাথে যুবলীগের কোন কর্মী জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাধনগর ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াড সদস্য মালেক ব্যাপারির বিরুদ্ধে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকে কুটুক্তি করার অভিযোগ আনে স্থানীয় যুবলীগ। ওর্য়াড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মাসুদ রানা সহ তার সমর্থকরা থানায় এসংক্রান্ত একটি অভিযোগ করতে গেলে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের স্থানীয়ভাবে মিমাংশা করে নেয়ার পরামর্শ দেন। দলীয়ভাবে দুপক্ষকে নিয়ে মিমাংশার উদ্দোগ নেয়া হলে সোমবার সকালে বাঁিশলা গ্রামে শালিস বৈঠক বসে। উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি নাসির হোসেন ও ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ এলাকার গ্রাম প্রধানদের উপস্থিতিতে বৈঠক শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষই নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান চেয়ে বিষয়টি মিমাংশা করে নেয়। কিন্তু বেঠক শেস হওয়ার মুহুর্তে যুবলীগের স্থানীয় কর্মীদের কয়েকজন ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক ব্যাপারির দিকে চেয়ার নিয়ে তেড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে ইউপি সদস্য মালেক রক্তাক্ত জখন হয়। উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে স্বামীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে ইউপি সদস্যের স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় ২ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মাসুদ রানার সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শালিস বৈঠকে উপস্থিত ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ঘটনাটি যুবলীগের ওপর কোন ভাবেই বর্তায়না। কেননা উভয় পক্ষের মধ্যে ঘটার বিষয় নিস্পত্তি হয়ে যায়। শালিস বৈঠ শেষে হঠাৎ করেই এই হামলার ঘটনা ঘটে। আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম তারা কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। ঘটনার সাথে যুবলীগের কেউ জড়িত নয়। ইউপি সদস্য আব্দুল মালেকের সাথে পুর্ব বিরোধের জেরে এমনটি ঘটেছে বলে গ্রামবাসীদের কাছে থেকে জানতে পেরেছি।
উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, এই ঘটনার সাথে যুবলীগ বা আওয়ামীলীগের কেউ জড়িত নয়। গত ইউপি নির্বাচনের সময় ভোট করা নিয়ে একটি পক্ষের সাথে আব্দুল মালেকের বিরোধ চলে আসছিল। তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,পূর্ব বিরোধের জের ধরে বাঁশিলা গ্রামে দুই পক্ষ শালিস বৈঠক বসে। শালিসে দুই পক্ষের মধ্যে আপোস মিমাংসা হয়।পরে ইউপি সদস্য মালেক ব্যাপারি ওপর হামলা করে প্রতিপক্ষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।কারা জড়িত বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই জন কে আটক করা হয়েছে।