নাটোর অফিস ॥
নাটোর শহরের পোষ্ট অফিস এলাকায় ছাত্র ও যুবলীগ কর্মীদের বহনকারী মোটর সাইকেলের সাথে পুলিশের মোটর সাইকেলের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ও ছাত্র-যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে হাসিব উদ্দিন (২৪) ও সেলিম হোসেন (২৫) নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ ৫ জন আহত হয়। আহত ওই দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে সদর হাসপাতাল সড়কের পোষ্ট অফিস মোড় এলাকায় তাদের প্রকাশ্যে মারপিট করা হয়। আহত হাসিব ও সেলিম নাটোর পুলিশ লাইনে কর্মরত। তারা সাদা পোশাকে ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পুলিশ কনস্টেবল হাসিব ও সেলিম জাতীয় শিশু দিবসের মেলায় পুলিশের স্টল সাজানোর জন্য সাদা পোশাকে বেলুন কিনতে পুলিশ লাইন থেকে মোটর সাইকেলে যাচ্ছিলেন। এসময় বঙ্গবন্ধুর জন্ম বার্ষিকী অনুষ্ঠান শেষে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পোষ্ট অফিস মোড় এলাকায় দু’টি মোটর সাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এসময় কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সাদা পোশাকে থাকা দুই পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয় ছাত্র ও যুবলীগ কর্মীরা।পুলিশও তাদের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে আহ ওই দুই পুলিশকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে নাদিম,জনি ও সাগর নামে আহত ছাত্র ও যুবলীগের ৩ কর্মীকে পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে এই দুই পুলিশ কনস্টেবলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে নাটোর -৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস,পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজানসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নেন এবং তাদের সাথে কথা বলেন এবং তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করার কথা বলেন। এসময় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ঘটনার সময় আহত তিন দলীয় কর্মীকে পুলিশের জিম্মায় দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন,দুটি মোটর সাইকেলের সংঘর্ষ হলে উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এসময় পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকে ছিলেন। তারাই উত্তেজিত হয়ে মোটর সাইকেল আরোহী দুইজনকে মারপিট শুরু করলে একজনের কপাল ফেটে যায় এবং অপরজন কানে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এসময় তাদের সাথে থাকা আরো একজন একত্রে পুলিশের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের ঘটনাটি পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সহ হাসপাতালে যাই। এসময় পুলিশের সাথে কথা বলে ছাত্র ও যুবলীগের আহত তিনজনকে পুলিশের হেফাজতে দিয়ে তাদের ভর্তি করা হয়। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। নেতৃবৃন্দ পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার মানুষের কাছে ঘটনার বর্ননা শুনে মনে হয়েছে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, পুলিশ সাদা পোশাকে থাকায় এমন বিপত্তি হয়েছে। তারাই প্রথমে ওই ছেলেদের মারপিট শুরু করে। যে ঘটনাই ঘটুক পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
নাটোর পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আহত ওই দুই কনস্টেবল সাদা পোশাকে ছিলেন। তারা জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে পুলিশ লাইনে আয়োজিত মেলায় স্টলের সাজ সজ্জার জন্য বেলুন কিনতে মোটর সাইকেলে যাচ্ছিলেন। পথে অন্য একটি মোটর সাইকেলের সংঘর্ষ হলে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মোটর সাইকেল আরোহীরা পুলিশ সদস্যদের ওপর চড়াও হয়ে মারপিট করে। হামলাকারীরা ইট দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। প্রকাশ্যে এবং জনসমুখ্যে এই হামলা চালানো হয়। কনস্টেবল সেলিমের মাথায় ৭টির মত সেলাই দিতে হয়েছে। তাদের দুজনকেই রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।