নাটোর অফিস॥
নাটোরের বড়াইগ্রামে জাম্বিয়া বেওয়া (৫০) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার গড়মাটি মোল্লাপাড়া এলাকায় সুদ ব্যবসার জেরে ওই নারীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকাল ৮টায় পুলিশ একটি তামাক ঘরের ভেতর থেকে ওই নারীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত জাম্বিয়া বেওয়া উপজেলার জোনাইল হরিপুরেরর মৃত আফসার আলীর স্ত্রী। সে ঘটনাস্থলের পাশ্ববর্তী গড়মাটি উত্তর পাড়ায় বাবার বাড়িতে থাকতো। পুলিশ লাশ ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এদিকে ঘটনার পর হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত মোল্লাপাড়ার মৃত তাহের মোল্লার ছেলে নইমউদ্দিন মোল্লা (৫৫) বাড়িতে তালা মেরে স্বপরিবারে পালিয়ে গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, স্বামীর মৃত্যুর পর জাম্বিয়া বেওয়া বাবার বাড়ি মোল্লাপাড়া এলাকায় চলে আসে। সেখানে সে ওই এলাকায় সাইফুল মোল্লার ধানের চাতালে কাজ করতো। একই সময় সে ওই এলাকার নইমউদ্দিন মোল্লার সাথে সে সুদ ও জমি বন্ধকী ব্যবসা শুরু করে। গত মাসে দিশা সংস্থা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নইমুদ্দিনকে দেয়। সাপ্তাহিক কিস্তির জন্য জাম্বিয়া নইমউদ্দিনকে বললে সে নানা টাল-বাহানা করতে থাকে। এছাড়া আরও প্রায় নগদ ২ লক্ষ টাকা ও জমি বন্ধক নিয়েও নইমউদ্দিনের সাথে জাম্বিয়া বেওয়ার বিরোধ চলছিলো। রোববার রাত ৮টার দিকে নইমউদ্দিন টাকা নেয়ার জন্য জাম্বিয়াকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। পরে তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। সোমবার সকাল ৮টার দিকে নইমদ্দিন নিজেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালামকে মোবাইল ফোনে জানায়, জাম্বিয়া তার তামাক ঘরের বাঁশের আড়ার সাথে রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান এ ঘটনা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে জাম্বিয়ার আত্মহত্যার স্থান, ধরণ ও লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে নইমউদ্দিনের বাড়ির পাশে জঙ্গল পরিস্কার করার ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও সন্দেহ তৈরি করেছে।
সংবাদ পেয়ে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল আলম, ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বড়াইগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহিম জানান, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা খুঁজে বের করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।