নাটোর অফিস ॥
নাটোরের সরকারী খাদ্য গুদামে নষ্ট চাল সরবরাহের সময় প্রায় ৬শ বস্তা নষ্ট চালসহ ট্রাক আটক করেছে প্রশাসন। পরে জেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে জব্দকৃত চালগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের বড়গাছা এলাকার সরকারী খাদ্য গুদামে ৬ নং গুদামে আনলোড করার সময় চালগুলি খাওয়ার অযোগ্য নষ্ট চাল দেখতে পায় শ্রমিকরা। খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা খাতুন ঘটনাস্থলে গিয়ে চালগুলি জব্দ করা সহ ট্রাকটি আটক করেন। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশের একটি দলও সেখানে গিয়ে হাজির হয়। বেলাল উদ্দিন বেলু নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী চালগুলি একটি ট্রাকে নিয়ে আসে। তবে চালগুলি চুক্তিবদ্ধ তিন মিল মালিকের নামে সরবরাহ করা হচ্ছিল বলে জানান খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন বেলু ৩০ কেজি ওজনের ৫৯১ বস্তা চাল বোঝাই একটি ট্রাক নাটোর সরকারি খাদ্য গুদামে নিয়ে যান। সেখানে চালগুলি আনলোড করার সময় শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। এসময় বোঙ্গা মেরে বস্তা থেকে খাওয়ার অযোগ্য নষ্ট চাল দেখতে পায় তরা। বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয়। একই সময়ে খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা খাতুনও সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন। তারা সকলেই দেখেতে পান বস্তায় ভরা খাওয়ার অনুপযোগী নষ্ট চাল। এসময় অনলোডিং বন্ধসহ চালগুলি জব্দ করা হয়। পরে ট্রাকটিও আটক করা হয়।
এদিকে নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর দাবি এঘটনার সাথে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার জড়িত রয়েছে।
তবে গুদাম কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন বলেন, তিনি ট্রাকের উপরিভাগের বেশ কয়েকটি বস্তা পরীক্ষা করে ভাল চাল দেখতে পেয়ে আনলোডের নির্দেশ দিয়ে তিনি অফিসে গিয়ে বসেন। পরে শ্রমিকরা বেশ কিছু বস্তায় নষ্ট চাল রয়েছে বলে জানালে তিনি আনলোডিং বন্ধ করে দেন এবং উর্ধতন কর্মকর্তাকে অবগত করেন। তিনি আরও জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন বেলু চুক্তিবদ্ধ তিন মিল মালিক নলডাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম মাধনগর এলাকার আব্দুল মান্নান, সদর উপজেলার দস্তানাবাদ গ্রামের তৈয়ব আলী ও কাফুরিয়া গ্রামের আব্দুল রহমানের নামে এক ট্রাক চাল সরকারী খাদ্য গুদামে সরবরাহের জন্য নিয়ে আসেন। মিল মালিকদের প্রতিনিধি হিসেবে চালগুলি আনলোডের অনুমতি দেয়া হয়। চালগুলো আনলোড করার সময় শ্রমিকরা বোঙ্গা মেরে বস্তায় নষ্ট চাল দেখতে পায়। এসময় তারা আমাকে খবর দিলে আমি তাৎক্ষনিক আনলোডিং বন্ধ করে দিই।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবিন্দ্র লাল চাকমা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হ”্ছ।ে গুদাম কর্মকর্তা জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মতিন জানান,খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা দেখতে পেয়েছেন।
নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা খাতুন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানাতে পারেন সদর উপজেলা সরকারী খাদ্য গোডাউনে একটি ট্রাকে করে খাবার অনুপযোগী নষ্ট চাল গোডাউনে সরবরাহ করা হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি ট্রাক থেকে ৫৯১ বস্তা প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি করে নষ্ট চাল পাওয়া যায়। এসময় চাল সরবরাহ কাজ বন্ধ করে ট্রাকটি আটক করা হয় এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবিন্দ্র লাল চাকমাকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।