নাটোর অফিস॥
করোনা সংক্রমন বেড়ে গেলে গত বুধবার থেকে নাটোর ও সিংড়া পৌরসভা এলাকায় কঠোর বিধি নিষেধ সহ ৭ দিনের লকডাউন ঘোষনা করে জেলা প্রশাসন। সোমবার ঘোষিত লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিন পার হয়ে যাচ্ছে। রাত পোহালেই শেষ দিনের লকডাউন শুরু হবে। লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিন প্রায় সারাবেলায় ছিল বৃষ্টি ঝড়া। তাই শহরে মানুষের উপস্থিতি না থাকারই ধারনা ছিল অনেকের। বৃষ্টি ভেজা দিন হলেও লকডাউনের অন্যদিনের তুলনায় এদিন মানুষের উপস্থিতি ছিল বেশী । শহরে যানবাহন চলাচলের দৃশ্যও ছিল চোখে পড়ার মত। শহরে মানুষের উপস্থিতি বৃষ্টিও বাধা হতে পারেনি। লকডাউনের বৃষ্টিভেজা ষষ্ঠ দিনে অনেকেই কাক ভেজা হয়ে বাড়িও ফিরেছেন। লকডাউন নামের ব্যবস্থা বা শব্দকে তাড়াতেই যেন ওই শ্রেণীর মানুষের সরব উপস্থিতি ছিল শহরে। স্থানীয়ভাবে ঘোষনানুয়ী আর একদিন রয়েছে লকডাউনের আয়ুস্কাল। কঠোর বিধি নিষেধও সেই মানুষদের ঠেকানো যাচ্ছেনা। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ঝুঁকিপুর্ন এবং রেডজোনেই থেকে গেছে নাটোর জেলা।
শহরবাসীদের অনেকের অভিমত ইতিমধ্যে তারা হাঁপিয়ে উঠেছেন। তাদের দাবী বাড়িতে অলস সময় কাটছেনা। দিন মজুরসহ নি¤œ আয়ের মানুষদের অভিযোগ,তারা সংসারের ঘানি টানতে পারছেননা। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তারা। নানা জনের নানা মত। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছিল তা কতটুকু সফল? জিজ্ঞাসা অনেকের। সফল শব্দের সজ্ঞা নিয়ে বিতর্কে জড়াতে চাননা কেউ। সবাই সুস্থ্য শরীরে বাঁচতে চান। লকডাউন ঘোষনার পর কেউ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলেছেন। আবার কেউ কেউ বিধি অমান্য করেছেন। তাদের কেউ কেউ জরিমানাও গুনেছেন। ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন সহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা গত ৬দিন ধরে কঠোর অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তার পরও শংকা নিয়েই ঘরে ফিরতে হচ্ছে। আইনকে অমান্য করে অনেকেই বাড়ির বাহিরে বের হয়ে এসেছেন। অনেকেই বিধি লংঘন করে ঝুঁকিপুর্ন করেছেন পরিবেশকে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী লকডাউন চলাকালীন নাটোরে করোনায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৪ জন।
বিধি অনুযায়ী মাস্ক পড়া বাধ্যতামুলক হলেও মাস্ক হয় পকেটে রেখেছেন অথবা থুতনির নিচে রেখেছেন। আবার কেউ ভুল করে বাড়িতে রেখে আসার নানা অজুহাত দেখিয়েছেন। এসব অপরাধ করা সত্বেও জনসাধারন যাতে দুভোর্গ বা অযথা হয়রানির শিকার না হন সেদিক লক্ষ্য রেখেই দায়িত্ব পালন করছে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য সহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।তাদের সর্বাত্বক সহযোগীতা করেছেন জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ,সাংবাদিক সহ সকল পেশার মানুষ। এরপরও থাকতে হচ্ছে ঝুঁকিপুর্ন পরিবেশে। করোনা নিয়ে ভার্চুয়াল বিভিন্ন সভা সেমিনারে সবাই বলে থাকেন মাস্ক পড়তে অনিহা অনেকর। বিধিও মানতে চাননা। প্রতিনিয়ত লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমন। মৃত্যু পিছু ছাড়ছেনা। তাই সচেতনতা ব্যতিত আইন করে জীবন রক্ষার ব্যবস্থা করে কতটুকু সফলতা আসবে এমন জিজ্ঞাসা অনেকের। প্রকৃতির নিয়মে আসা ঝড়া বৃষ্টিও যেন কিছু মানুষের এমন আচরনে লজ্জা পাচ্ছে!