নাটোর অফিস॥
নাটোরে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রচারণার পরিধি বৃদ্ধি, খাবার হোটেলগুলোতে বসে খাওয়া-দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে পার্সেল বিক্রি এবং করোনা পজিটিভ ব্যক্তিদের বাড়ি বা সংক্রমন এলাকায় লালপতাকা উত্তোলন করা হবে। করোনা পজিটিভ ব্যক্তিদের চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় জেলায় করোনা সংক্রমনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে আইন প্রয়োগ সহ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় জানানো হয় নাটোরে করোনা সংক্রমনের হার ৫৩ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনায় শাহাবুদ্দিন (৫৫) নামে আরো এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এনিয়ে নাটোরে করোনায় মারা গেলেন মোট ২৫ জন। এ পর্যন্ত নাটোরে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৬৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৪৯৩ জন।
সিভিল ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান জানান, জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৩২ ব্যক্তির করোনা ভাইরাস নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে মোট ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের হার ৫৩.১৩ শতাংশ। সোমবার নাটোরে সংক্রমণের হার ছিল ৩৭.৯৩ শতাংশ। সিভিল সার্জন আর জানান, জেলার মোট ৩২ জনের কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ১৭ জন। আক্রান্ত ১৭ ব্যক্তির মধ্যে ১৪ জনের অবস্থান নাটোর সদর উপজেলায়। আক্রান্ত ওই ১৪ জনের মধ্যে বেশীরভাগই নাটোর শহর ও শহরতলী এলাকায়। জেলায় এ পর্যন্ত জেলায় ১৪ হাজার ৬৫ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করে এক হাজার ৭৬৪ জনের সংক্রমণের ফলাফল পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন এক হাজার ৪৯৩ জন। বর্তমানে মোট আক্রান্ত ২৪৬ জনের মধ্যে ৩২ ব্যক্তি নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করছেন এবং ২১৪ ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইনে অবস্থান করছেন।
এদিকে জেলা পুলিশ করোনা নিয়ন্ত্রনে মানুষদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে শহরের বিভন্ন এলাকায় চেক পোষ্ট বাসিয়েছে। তারা পথচারী সহ গণপরিবহনে তল্লাশী চালাচ্ছে।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরার্মশ দেওয়ার পাশাপাশি শক্ত অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পু্লশি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, বর্তমান পরিস্থিতি উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে না আসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া স্বাস্থ্য বিধি ও মাস্ক ব্যবহারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রচারণার পরিধি বাড়ানো সহ করোনা পজিটিভ ব্যক্তির বাড়ি অথবা প্রয়োজনে সংক্রমন এলাকায় লালপতাকা উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি কঠেরভাবে প্রয়োগ করা হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাদিম সারোয়ার,জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ, কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার সরকার, সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ পরিতোষ কুমার রায়, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।