নাটোর অফিস॥
অবশেষে ইজারা দেওয়া হল নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত। এরফলে চরম স্বস্তি ফিরেছে লিচু চাষীদের মানে। এরআগে লিচু বিক্রিত টাকার একটা বড় অংশ দিয়ে যেতে হতো আড়তদারদেরকে। অযথাই কষ্টের ফসলের টাকা দেয়া নিয়ে ছিল চাষীদের মনে ক্ষোভ আর অস্বস্তি।
সোমবার ৯ লাখ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে লিচু আড়তটি। স্থানীয় মাহাবুব হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী ইজারা নেন। এখন থেকে লিচু চাষীদের আর কোন কমিশনের টাকা দিতে হবে না। তবে যারা লিচু ক্রয় করবেন তাদেরকে প্লাস্টিকের ক্যারেট প্রতি ৫ টাকা, বড় ঝুঁড়ি ২০ টাকা এবং ছোট ঝুঁড়ি প্রতি ১০ টাকা ইজারা দিতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু রাসেল বলেন, লিচুর রাজধানী হিসেবে পরিচিত নাটোরের গুরুদাসপুরে উৎপাদিত লিচু নিয়ে গত ২০বছর ধরে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত পরিচালনা হয়ে আসছে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানা জায়গার ওপর আড়ত প্রতিষ্ঠিত এমন দাবীতে এতদিন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিতে পারেনি। এই সুযোগে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত মালিক সমিতি কমিশনের নামে ১০০লিচু বিক্রয়ের ওপর বাগান মালিকদের নিকট থেকে ৮ থেকে ১৩ টাকা এবং পাইকারী ক্রেতাদের কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ টাকা কমিশন নিয়ে আসছিল। এতে করে কৃষকের লাভের টাকা ঢুকতো আড়ত মালিকদের পকেটে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনার বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত এলাকায় অনুসন্ধান করে খাস জায়গা বের করে হাট বাজার ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী সোমবার দুপুরে উন্মুক্ত ইজারা ঘোষণা করা হয়। এসময় স্থাণীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে মাহাবুব হোসেন নামে একজন সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকায় চলতি মৌসুমের জন্য আড়তটি ইজারা গ্রহণ করেন। এতে করে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছে লিচু চাষীরা।
ইজারা কার্যক্রমের সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলাল শেখ, নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবুসহ প্রমুখ।
এরআগে রোববার দুপুরে নিরাপদ লিচু উৎপাদন, আহরন এবং বিক্রয় নিয়ে ব্যবসায়ী, লিচু চাষীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। সভায় লিচু ব্যবসায়ীরা আড়ত মালিকদের কমিশন বাণিজ্যের ভিষয়টি উপস্থাপন করেন। এসময় পুলিশ সুপার কমিশন বাণিজ্যে বন্ধের নির্দেশ দেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, লিচুর রাজধানী হিসেবে পরিচিত গুরুদাসপুরে এবার লিচুর আবাদ হয়েছে ৪১০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১০০মেট্রিক টন। তবে গত বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন খুব ভাল না হলেও ভাল দাম পাওয়ায় খুশি বাগান মালিকরা। প্রতি এক হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে ২হাজার থেকে ২ হাজার ২০০টাকায়।