নাটোর অফিস॥
নাটোরের বড়াইগ্রামে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের নামে ১০ লাখ টাকা আতœসাতের মহড়া চলছে। স্থাণীয়দের বাধার মুখে বিষয়টি সাময়িকভাবে বাধা বন্ধ হলেও সংশ্লিষ্টরা ভিন্ন পথে টাকা আতœসাতের চেষ্টায় আছে। এই নিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এবং স্থাণীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার সরেজমি পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার নগর ইউনিয়নের কুমারখালী এলাকায় আটটি গ্রামের কৃষি উন্নয়নের জন্য ১৯৯৮ সালে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্ষুদ্র পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় একটি সমিতি গঠন করে নালা খনন, বাধ নির্মাণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি স্লুইস গেট তৈরী করা হয়। সমিতিটির নাম কুমারখালী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড। যার নিবন্ধন নম্বর-৫১-তারিখ-১৪-০৩-৯৯। এরপর বাঁধের উপর বিভিন্ন বনজ গাছ রোপন করা হয়। স্থানীয় ওই আট গ্রামের প্রায় এক হাজার নর-নারী সমিতির সদস্য পদ গ্রহণ করেন। এরপর প্রায় একযগ খুব ভালোই চলছিল সমিতির কার্যক্রম। প্রতিবছরই এলজিইডি থেকে খাল, বাঁধ ও স্লুইস গেট রক্ষণাবেক্ষনের জন্য কিছু বরাদ্দ দেয়। তাই দিয়ে যথাযথ ভাবে কার্যক্রম চলে আসছিল। এরপর অভ্যন্তরিণ কোন্দলে ২০১১ সালে সমিতির কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলমান।
এরমধ্যে অতি সংগোপনে স্থাণীয় বড়পিঙ্গইন গ্রামের আনোয়ার হোসেন গং সমবায় অফিসের সাথে যোগসাজসে দাতা, প্রতিষ্ঠাতাসহ প্রায় সকল সদস্যকে বাদ দিয়ে অনুসারী পারিবারের সকল সদস্যের নাম দিয়ে দুই শতাধিক ভূয়া সদস্য দেখিয়ে কমিটি গঠন করেন। যার বাস্তব কোন ভিত্তি নাই। এরপর তারা এলজিইডির সাথে যোগসাজসে খাল সংস্কারের নামে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ নেয়। কাজ বাস্তবায়নের জন্য ২৫ সদস্যের দুটি শ্রমিকদল গঠন করে তাদের নিজ নিজ নামে জনতা ব্যাংক জোনাইল শাখায় হিসাব খুলেছেন। বাস্তবে ওই খালে কোন মাটি কাটার প্রয়োজন নাই। ১০-২০ জন শ্রমিক দিয়ে আগাছা পরিস্কার করলেই হবে।
এসময় স্থাণীয় আব্দুস সামাদ, আমিনুল ইসলাম, বাবুল হোসেনসহ অন্তত ৩০জন সদস্য অভিযোগ করে বলেন, সমিতির ভূয়া কমিটি, মাত্র চার-পাঁচ হাজার টাকার শ্রমিক দিয়ে আগাছা পরিস্কার করে ১০ লাখ টাকা আতœসাতের চেষ্টা করছে। তারা যাদেরকে শ্রমিক দেখিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলেছে তারাও কেউ প্রকিৃত শ্রমিক নয়। তারা বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া সমিতির বাঁধ থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করে দিয়েছে। সমিতির নিজস্ব জমি বিক্রি করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এরমধ্যে সমবায় অফিস কিভাবে কমিটি করে আবার এলজিইডি কিভাবে বরাদ্দ দেয় বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল কাজ থেকে উৎকোচ নিতে না পেরে মিথ্যা অভিযোগ করছে। আসলে সব ঠিক আছে।
উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল আজিজ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।