নাটোর অফিস ॥
নাটোরের নলডাঙ্গায় ফসলি জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করার পর হেলাল নামে এক কৃষকের লক্ষাধিক টাকার ফসল ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার হলুদঘর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক হেলাল জানান, নলডাঙ্গা বাজারের বিজয় এন্টারপ্রাইজের মালিক বজলুর রশিদের কীটনাশক দোকান থেকে কীটনাশক কিনে তার প্রায় ২৮ কাঠা জমিতে আলু ও পেঁয়াজের চারায় প্রয়োগ করেন। ছত্রাকনাশক ওই কীটনাশক প্রয়োগ করার তিনদিন পরই ফসল হলদে বর্ণ ধারন করে পচে নষ্ট হতে শুরু করে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগে জানালে কৃষি বিভাগ সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োগ করা কীটনাশকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠিয়েছে। এদিকে কীটনাশক দোকান মালিক বজলুর রশিদ বলেছেন, কীটনাশকের কারনে ফসলের ক্ষতি হলে তিনি ওই কৃষককে ক্ষতিপূরণ দিবেন ।
উপজেলার হলুদঘর গ্রামের আসমত আলীর ছেলে হেলাল ধার দেনা করে লাভের আশায় হলুদঘর মাঠে ১৭ কাটা জমিতে ল্যালা (আইল) পেয়াজ,৫ কাটা জমিতে পেঁয়াজের চারা ও ৫ কাটা জমিতে আলু রোপন করেন। ভালো ফলন পাওয়ার আশায় এসব ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয়। তিনি বজলুর রশিদের কীটনাশক দোকান থেকে তার পরামর্শে ব্যাবিলন এগ্রিসাইন লিমিটেড কোম্পানির ৭ ধরনের কীটনাশক জমিতে প্রয়োগ করতে বলেন। দোকানদারের পরামর্শে কৃষক হেলাল জমিতে প্রয়োগ করেন। ওই কীটনাশক প্রয়োগের তিনদিন পর এসে দেখেন ল্যালা পেঁয়াজ,পেঁয়াজের চারা ও আলু হলুদ বর্ণ ধারন করে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তিনি দিশেহার হয়ে পড়েন। বিষয়টি উপজেলা কৃষি বিভাগে জানলে কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা সরেজমিন দেখে প্রয়োগকৃত কীটনাশকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠিয়ে দেন।
কৃষক হেলাল আরও জানান,তিনি ধার দেনা করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ল্যালা পেঁয়াজ,পেঁয়াজের চারা ও আলু লাগিয়েছিলেন। কিন্ত বজলুর দোকান থেকে ভেজাল কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করেই তার সর্বনাশ হয়েছে। তিনি এসবের ক্ষতিপূরুনের দাবী জানান। অসিফ নামে অপর এক কৃষক জানান,তিনিও বজলুর দোকান থেকে কীটনাশক কিনে আলু,পেঁয়াজে প্রয়োগ করে একই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কীটনাশক দোকান মালিক বজলু বলেন, তিনি ব্যাবিলন এগ্রিসাইন লিমিটেড কোম্পানির ডিলার হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তার কাছ থেকে কৃষক হেলাল এই কোম্পানি কীটনাশক কিনে নিয়ে যায়। তার মত প্রতিদিন বহু কৃষক একই কীটনাশক কিনে নিয়ে জমিতে প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পাচ্ছে। কীটনাশকের কারনে হেলালের ফসলের ক্ষতি হয়নি দাবী করে বলেন তিনিও এর সঠিক তদন্ত ও গুনাগুন পরীক্ষা করে প্রয়োজনয়ি পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানান। তবে কীটনাশকের কারনে হেলালের ফসলের ক্ষতি হলে তিনি তার সমুদয় ক্ষতি পুরন করার প্রতি¤্রতি দেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার ফৌজিয়া ফেরদৌস জানান,অভিযোগ শুনে আমরা সরেজমিন ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করেছি এবং প্রয়োগকৃত কীটনাশকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল আসলে জানা যাবে কি কারনে ফসলের এ ক্ষতি হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষি উপ-সহকারীর মতামত ছাড়া কীটনাশক প্রয়োগ না করার পরামর্শ দেন।