লালপুর থেকে আশিকুর রহমান টুটুল
নাটোরের লালপুরে মধুবৃক্ষ খেজুরের রস সংগ্রহের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে গাছ ঝুড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন গাছিরা। যদিও এই মধুবৃক্ষের রস ও গুড় তৈরি হয়ে থাকে শীতকালে। তবে এবার গাছিরা শরতের মাঝে আগাম শুরু করেছেন গাছ প্রস্তুতে। করোনা মহামারির কারনে কোন কাজ না থাকায় গাছিরা এবার আগেই গাছ ঝুড়তে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
স্থানীয়রা বলেন, লালপুরে মধৃবৃক্ষ খেজুরের গাছ একটি অন্যতম সম্পদ। হেমন্তের শুরুতে উপজেলার বাজার গুলিতে উঠতে শুরু করবে সুস্বাদু খেজুরের পাটালি গুড়। মধুবৃক্ষ খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনে লালপুর উপজেলার খ্যাতি দেশ জুড়ে। এ অঞ্চলের খেজুর গুড়ের পাটালি রাজশাহী, ঢাকা, চাঁপাই, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, খুলনা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি। সকাল থেকে শুরু হয় খেজুর গাছ প্রস্তুতের কাজ। আর কিছুদিন পর এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহের পালা শুরু হবে । গাছ ঝোড়া ও রস সংগ্রহকে ঘিরে এই জনপদের শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় হরেকরকমের পিঠা-পুলি, ক্ষির ও পায়েস। তবে কিছু অসাধু মুনাফালোভী গুড় উৎপাদনকারীর কারণে উপজেলার এই ঐতিহ্য এখন ম্লান হতে চলেছে। বর্তমানে উপজেলার কয়েক হাজার পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল। সরকারের সুদৃষ্টির মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়নের আশা করেন স্থানীয়রা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় অনেক গাছিই খেজুরের গাছ ঝুড়ছেন। সাইদুল ইসলাম, হাসিবুল ইসলাম নামে কয়েকজন গাছির সাথে কথা হয়। তারা বলেন, সময় না হলেও আমরা একটু আগামই খেজুর গাছ ঝুড়ছি। আগাম রস নামাতে পারলে বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়া যাবে। গ্রাম-বাংলার সম্ভাবনাময় লাভজনক এই খাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় দিনে দিনে খাতটি বিলুপ্তির পথে।’
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন,‘খেজুর গাছ এই উপজেলার অন্যতম সম্পদ। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল খেজুরের গুড় উৎপাদন করতে না পারে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।