নাটোর অফিস॥
প্রকৃতির পাশাপাশি সিংড়ায় এবার মানুষ্য সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতি গুনতে হবে শতকোটি টাকার বেশী। আত্রাই নদীতে অবৈধ সোঁতি জালের কারনে এবার বন্যায় রাস্তা ও বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে অন্ত৩ ১৬টি বাড়ি সম্পুর্নœ এবং অন্তত আরো ১০টি বাড়ি আংশিক ক্ষতি হয়েছে। বাঁধ ও রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় বিলের মধ্যে দ্রুতবেগে পানি প্রবেশ করায় ৩ হাজার ২শ হেক্টর জমির ফসল ও ২হাজার ৩০৯টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বন্যায় সিংড়া উপজেলার ২৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং ২৩০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সিংড়া উপজেলায় এবারের দ্বিতীয় দফা বন্যা মানুস্য সৃষ্টি বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ সহ উপজেলার অধিকাংশ মানুষের। খোদ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও মনে করছেন। এবারের বন্যার মুল কারন আত্রাই নদীতে স্থাপন করা অবৈধ সোঁতি জাল ও সোঁিত জালের জন্য তৈরি বাঁধ। এই সোঁতি জাল ও বাঁধের কারনে বন্যার ভয়বহতা বেড়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ সহ পানি উন্নয়ন বোর্ড। সোঁতিজালের কারণে মানুষ্য সৃষ্ট এবারের বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য খোদ আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নিজে আত্রাই নদীতে স্থাপনকরা সোঁতি জাল উচ্ছেদে নামেন। গত বুধবার সর্বশেষ তথ্যমতে আত্রাই নদীর পানি সিংড়া পয়েন্টে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিন পৌর শহরের শোলাকুড়া এলাকায় রাস্তা ভেঙ্গে আত্রাই নদীর পানি বিলে প্রবেশ করে। এসময় সড়কের ধারের অন্তত ১৭টি বাড়ি সম্পুর্ন এবং আরো ১০টি বাড়ি আংশিক ক্ষতি হয়। শোলকুড়ার ভাটিতে নদীর একাধিকস্থানে স্থাপন করা অবৈধ সোঁতি জাল এই ভাঙ্গন ও বন্যা সৃষ্টির কারন বলে ক্ষতিগ্রস্থদের দাবী। এইসব সোঁতিজালের কারণে সৃষ্ট বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য শনিবার প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিত্বে আত্রাই নদীতে সোঁতিজাল উচ্ছেদ অভিযান শুর করেন। অভিযানে সোঁতি জাল জব্দ সহ বেশ কয়েকটি সোতিঁর বাঁধ অপসারন করা হয়। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন,অনুসন্ধান করে তারা নদীতে বসানো ৭০টি অবৈধ সোঁতি জাল ও স্থাপনা সহ জড়িতদের তালিকা পেয়েছেন। ওই তালিকা ধরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রসাশনকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। সোঁতি জালের বিরুদ্ধে তার অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং একই সাথে পানি কমার পর আর কেউ যাতে সোঁতি বসাতে না পারে সেটিও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসন সহ স্থানীয়দের সহায়তা কামনা করেছেন। এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় সিংড়ায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ াাহমেদ পলক এমপি হুঁশিয়ারী উচ্চারন করে বলেছেন, আত্রাই নদীর পানি প্রবাহ বাঁধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো অপশক্তি সোঁতি জাল দিয়ে পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্য সকল সেঁতি নিজ নিজ উদ্যোগে অপসারনের নির্দেশ দেন। নতুবা সকলকে আইনের আওতায় আনার কঠোর হুশিয়ারী দেন।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন,বন্যার জন্য অন্যান্যের মধ্যে সোঁতি জাল একটি বড় কারন। মানব সৃষ্ট বন্যার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করা হয়েছে। সোঁতি জালের সাথে যারা জড়িত তাদের তালিকা পাওয়া গেছে। সোঁতি জাল ও বাঁধ অপসারন অভিযানের পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা।
জেলা প্রসাশক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশ অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত থাকবে।