নাটোর অফিস ॥
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলের কারনে আত্রাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে বর্তমানে আত্রাই নদীর পানি সিংড়া পয়েন্টে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোরে আত্রাই নদীর পানির তোড়ে সিংড়া-কলম সড়কের শোলাকুড়ায় ও নাগর নদের রাখালগাছা-তাজপুর সড়ক (বাঁধ) ভেঙে গেছে। এতে করে ২৭৫০ হেক্টর জমির ফসল ডুবে গেছে। এদিকে সড়ক দু’টি ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চলনবিলের কৃষকের উৎপাদিত পণ্য আনা-নেয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ভাঙন দিয়ে দ্রুত গতিতে পানি প্রবেশ করে চলনবিলের কৃষকের স্বপ্ন এখন পানির নিচে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুটি সড়কে প্রায় ৫০০ফুট ভেঙে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আত্রাই নদীর পানির তোড়ে সিংড়া-কলম শোলাকুড়া এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের পাকা সড়ক ভেঙে দ্রুত গতিতে বিলে পানি প্রবেশ করছে। অপরদিকে নাগরনদের পানির তোড়ে রাখালগাছা-তাজপুর সড়কের হিয়াতপুর এলাকায় ভেঙে বিলে পানি প্রবেশ করে ফসল ও বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ঝুঁকিতে পড়েছে। থানা সদরের সঙ্গে বিছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশেষ করে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ও অসুস্থ্য রোগী সদরে আনা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। আত্রাই ও নাগর নদে ক্রমাগত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিংড়া পৌর এলাকার ১২টি ওয়াডের্ই পানি প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা ঘাট সহ বসত বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাসরিন বানু জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। আর ভেঙ্গে পরা বাঁধের পাশ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘর-বাড়ি নিরাপদে নেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সদা প্রস্তুত রয়েছে। সারাক্ষন বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। দ্বিতীয় দফা বন্যাকবলিত হয়েছে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া ও নলডাঙ্গা উপজেলা। বন্যাকবলিত মানুষদের আ¤্রয়ের জন্য সিংড়া ও নলডাঙ্গা উপজেলা এবং সিংড়া পৌর এলাকায় ৩৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। সিংড়া উপজেলার বর্ন্যাতদের সহায়তার জন্য নগদ ১ লাখ টাকা ও ২৫ মেট্রিক টন চাল এবং নলডাঙ্গার জন্য ৩০ হাজার টাকা ও ১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।