নাটোর অফিস॥
সম্পত্তি লিখে নিয়ে জালাল ,আলাল ও রসুন নামের তিন সন্তান তাদের ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবা জামেরুল এবং মা রাশেদাকে (৬৫) ভরণপোষণ বন্ধ করে দিয়েছিল। এদিকে তিন ছেলেকে জমি লিখে দেয়ায় তাদের মেয়ে বৃদ্ধ দম্পত্তির থাকার ঘরটিও ভেঙ্গে নিয়ে যায়। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন উপজেলার নাড়িবাড়ি গ্রামের ওই বৃদ্ধ দম্পত্তি। বাড়ি থেকে বের হয়ে আম্রয় খুজে নেন উত্তর নারী বাড়ি মবিদুল মোমোরিয়াল নিন্মমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসহায় ওই বৃদ্ধ দম্পত্তিকে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ খুলে দিয়ে তাদের থাকতে দেন। খবর পেয়ে রোববার রাতে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়া বৃদ্ধ দম্পত্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান এবং তাদের নিরাপদ আশ্রয় সহ খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদান করেন।
উদ্ধার হওয়া বৃদ্ধা রাশেদা জানান,খাবার চাওয়ায় ছেলেরা তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তার স্বামী জামেরুল প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার জন্য জমিজমা শেষ। মাত্র তিন শতক জায়গা ছিল তাদের নামে। সেই সম্পত্তি লিখে নেন তিন ছেলে। তাদেরকে ভরণপোষণ করানোর আশ্বাস দিয়ে ওই সম্পত্তি লিখে নেয় তিন সন্তান জালাল, আলাল ও রসুল । কিছুদিন পর ছেলেরা তাদের ভরণপোষণ বন্ধ করে দেয় । ছেলেরা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে এই স্কুলে এসে ওঠেন। মাষ্টার সাহেব আমাদের কষ্ট দেখে স্কুলের একটি ঘর খুলে দেন থাকার জন্য।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান,রোববার স্কুলে মিটিং করতে এসে ওই বৃদ্ধ দম্পত্তিকে বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে একটি কক্ষ খুলে দিই। সন্তানদের এমন অমানবিক আচরন মেনে নেয়া যায়না।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খাবার চাওয়ার অপরাধে তিন সন্তান তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এমন অভিযোগ ছিল ওই তিন সন্তানের বিরুদ্ধে। খোঁজ পেয়ে রোববার রাতে ওই স্কুলে গিয়ে স্কুলের একটি কক্ষে অন্ধকারের মধ্যে তাদের পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই অন্ধকার ঘর থেকে তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে। তাদের খাবারের জন্য ১০ কেজি চাউল, ১ কেজি ডাল,তেল ও আলু সহ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের তিন সন্তানকে থানায় ডেকে আনা হয়েছে। তারা যদি তাদের বাবা-মাকে ভরণ পোষনের সব ধরনের ব্যবস্থা করার মুচলেখা দেয়,তবে তাদের কাছে বাবা-মাকে তুলে দেয়া হবে।