নাটোর অফিস॥ নাটোর সদর উপজেলার আগদিঘা কাটাখালী গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজী (৮০) শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি না নেওয়ায় বিভিন্ন ক্লিনিক ঘুরতে ঘুরতেই বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
রোববার (১৯ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীর ছেলে আজিম উদ্দিন গাজী অভিযোগ করে বলেন, গত দুই বছর ধরে তার বাবা আব্বাস আলী গাজী শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গতরাতে শ্বাসকষ্ট বেশি হলে রোববার সকালে তাকে প্রথমে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আমার বাবাকে ভর্তি নেননি। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়েও হাসপাতালের ডাক্তাররা তাকে ভর্তি নেননি। পরে বাবাকে নিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে ঘুরে শেষ পর্যন্ত সততা ক্লিনিকে নিয়ে এলে তারা বাবার বেশ কিছু টেস্ট করান। টেস্ট করা পর তারা বাবাকে আবারও সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা বাবাকে ভর্তি নেননি। আবারও বাবাকে সততা ক্লিনিকে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসক দেখে কিছু ওষুধ লিখে দেয় এবং বাবার আরেকটি পরীক্ষা করা হয়। বাবাকে অক্সিজেন ও নেবুলাইজার দেওয়া অবস্থায় মারা যান।
মৃতের নাতী সোহেল অভিযোগ করে বলেন, আমার নানা একজন মুক্তিযোদ্ধা। বিনা চিকিৎসায় নানার মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।
খবর পেয়ে দুপুরে সততা ক্লিনিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীকে দেখতে যান নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ ও পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ও সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান।
সততা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী আব্দুল আওয়াল রাজা বলেন, খুবই খারাপ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী গাজীকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর তাকে নেবুলাইজার ও অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিলো।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক । চিকিৎসক বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিলো কি না, সে বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। কোনো অবহেলা থাকলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা যদি সত্যিই কোনো সরকারি চিকিৎসকদের অবহেলায় মারা যান, তাবে এর দায় তারা এড়াতে পারবেন না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।