জিডির সূত্রে জানা যায়, গত ২রা জুলাই দিবাগত রাতের কোন এক সময় চুরির এ ঘটনা ঘটে। ৩রা জুলাই ভোর ৪টায় কলেজের নৈশপ্রহরী মিজানুর রহমান ঝাঁড়ুদারদের জন্য মূল ফটক পেরিয়ে লোহার দরজা খুলে দিয়ে যান। সকাল ৯টায় কলেজের হিসাব শাখার অস্থায়ী কর্মচারী জুয়েল হোসেন ও মাহবুব হোসেন কক্ষের তালা খুলে কাউন্টার পেরিয়ে ভেতরের ঘরে প্রবেশদ্বারের সামনের জানালা ভাঙ্গা দেখতে পান। তড়িঘড়ি করে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান কাউন্টারের পেছনের ক্যাশ কক্ষে স্টিল আলমারী ভেঙ্গে ড্রয়ারে ভতরে থাকা টাকা চুরি করা হয়েছে। পরে হিসাবরক্ষক এসে জানান আলমারীতে ১,০৯,৪০৭ টাকা ছিল।
এদিকে চুরির ঘটনায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট হওয়া কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, যে বা যারা ঘটনায় জড়িত, তারা প্রথমে কলেজের পেছন দিকে পুকুরঘেষা পরিত্যাক্ত শৌচাগারের ছাদ টপকে ও পরে একটি দড়ির সাহায্যে জানালা পর্যন্ত পৌছেছে। এরপর ধারালো যন্ত্র দিয়ে পরিপাটি করে জানালার এক-চতুর্থাংশেরও কম অংশের গ্রিল কাটা হয়েছে। এরপর ভেতরে প্রবেশ করে ক্যাশ কক্ষে ঢুকে আলমারীর কাঙ্খিত ড্রয়ার ভেঙ্গে টাকা বের করা হয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় এ ঘটনাকে অত্যন্ত পরিকল্পিত মনে করছেন অনেকেই। তাদের মতে, কাজটি এমন কেউ করেছে, যে বা যারা জানে টাকা কোথায়, কোন আলমারীতে, কোন ড্রয়ারে থাকে। আবার, ওই ড্রয়ারে ৫ হাজার টাকা কাগজে মোড়ানো থাকলেও, সেটি রয়েই গেছে। এ কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার সময় রহস্যজনকভাবে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো কোন কাজ করেনি।
কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদত রাজীব বলেন, ‘এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব না। তবে এর পেছনে ‘পরিকল্পনা’ কাজ করেছে, এটি বলা যেতেই পারে।’ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষিদের সনাক্তের দাবী করেন তিনি।
আবুল মুনসুর নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার বাবা-চাচারাও এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন। আমি ছিলাম। এখন আমার মেয়েটাও পড়ে। কোনদিনও টাকা চুরির মতো ঘটনা ঘটেনি। এবারই প্রথম শুনলাম। নিরাপত্তার ব্যাপারটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিলো।’
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুজ্জামান বলেন, ‘ কলেজের ইতিহাসে এবারই প্রথম এমন ঘটনা ঘটলো। আমরা থানায় জিডি করেছি। পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।’ ঘটনার সাথে কলেজের কেউ জড়িত কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কে বা করা করেছে এমন কাজ, কোন ধারণা করতে পারছি না।’
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘ এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ জিডি করে গেছেন। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।