নাটোর অফিস॥
নাটোর সদর উপজেলার গাজীর বিল এলাকায় নির্মাণাধীন নাটোর এলপিজি ফিলিং স্টেশনের সংলগ্ন নাটোর-ঢাকা মহাসড়কের এক পাশের ৪৫টি আমগাছ মাত্র ৯৬০০ টাকায় বিক্রি করেছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প। এতে প্রতিটি আমগাছের মূল্য পড়েছে মাত্র ২১৩ টাকা। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের টেন্ডারে অংশ নিয়ে গাছগুলো কিনেছেন পাশ্ববর্তী লক্ষীপুর গ্রামের আমীর আলী।
আজ বুধবার(৬ই মে) সকালে গাছ কাটার সংবাদ সংগ্রহ করলে গেলে দুই গণমাধ্যমকর্মীর উপর চড়াও হন আমীর আলী ও তার লোকজন। এসময় তারা ওই দুই গণমাধ্যমকর্মীর ছবি তুলে রাখার চেষ্টা করেন।
এদিকে, এতো কম মূল্যে আম গাছগুলো বিক্রির ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নাটোর জোনাল কার্যালয়ে গিয়ে সহকারী প্রকৌশলীর দেখা পাওয়া যায়নি। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
জানা যায়, গত ৮ই মার্চ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পাবনার দাশুরিয়া হতে নাটোর মহাসড়কের পাশে ৯৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ৪৫টি আম গাছ বিক্রির জন্য নিলাম আহ্বান করে। ওই নিলামে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হন আমীর আলী। এ সংক্রান্ত তথ্য জানিয়ে গত ৩রা মে আমীর আলী বরাবর গাছ কর্তনের কার্যাদেশ প্রেরণ করেন বরেন্দ্রর নাটোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী আহসানুল করিম। প্রকৌশলীর মনোনীত প্রতিনিধির উপস্থিতিতে গাছ কাটার নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে সকালে বরেন্দ্রর কোনো প্রতিনিধির উপস্থিতি ছাড়াই গাছ কাটা শুরু করেন আমীর আলী।
স্থানীয়রা জানান, এসব গাছের প্রতিটিতে আম ধরেছিলো। ক’দিন আগেও গাছগুলোতে আমের থোকা ঝুলছিলো। কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর তড়িঘড়ি করে ক্রেতা আমীর আলী আমগুলো সংগ্রহ করে গাছগুলো কাটা শুরু করেন। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ১০ মণ খড়ি পাওয়া যাবে যার বাজার মূল্যই আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। এভাবে গাছপ্রতি ন্যুনতম আড়াই হাজার থেকে ২৭০০ টাকা লোকসানে বিক্রি করেছে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।
নিলাম প্রক্রিয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে গাছের ক্রেতা আমীর আলীর রাগন্বিত হন। তিনি বলেন, ‘আমি যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে নিলামে নির্বাচিত হয়েছি। আমি সাংবাদিকদের নিলামের ব্যাপারে বলতে বাধ্য নই। সাংবাদিকরা আমাকে টাকা দেয় না যে তাদের কথা শুনতে হবে।’
এ ব্যাপারে বরেন্দ্রর নাটোর জোনের সহকারী প্রকৌশলীর বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার খোঁজে অফিসে যাওয়া হলে অফিসের নিরাপত্তা কর্মী আবদুল বারেক জানান, এখন কেউ অফিস করেন না। তিনি নিজেই শুধু পাহারা দেন। গত দুই-তিনদিনে কেউ আসেননি। গাছ কাটার ব্যাপারে কোনো আদেশ প্রদান করা হয়েছে কি না বলতে পারবো না।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, খুবই নগণ্য দামে গাছগুলো বিক্রির কথা শুনেছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।