নাটোর অফিসঃ
দেশে করোনা সংক্রমণের ৫১ তম দিনে ৬১ তম জেলা হিসেবে নাটোরে সনাক্ত হলো ৮ করোনা রোগী। তবে তাদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৫-৬ দিন আগে। এদের মধ্য নাটোর সদর উপজেলায় ১ জন, গুরুদাসপুর উপজেলায় ২ জন এবং সিংড়া উপজেলায় ৫ জন রয়েছে। একজন নারীসহ আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন পোষাক শ্রমিক ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। এর মধ্যে সিংড়া উপজেলার এক জন ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন কিছুদিন আগে। বাকী ৭জন সুস্থ রয়েছেন। তাদের কারও শরীরে করোনা উপসর্গ ছিলো না।
মঙ্গলবার(২৮শে এপ্রিল) রাতে একযোগে ৮ জনের করোনা আক্রান্তের খবর জানার পর জেলাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার কাউকেই বাড়ি থেকে বের না হতে বলা হয়েছে। সকাল থেকেই পূর্বের যে কোনো সময়ের তুলনায় কঠোর অবস্থানে থাকার ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ।
আক্রান্তদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় ছুটে গেছেন ইউএনও ও পুলিশ প্রশাসন।
আক্রান্তদের স্ব স্ব এলাকা লকডাউনের প্রস্ততি নেয়া হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২২ এবং ২৩ এপ্রিলের নমুনায় ৮জনের করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নাটোর জেলা সিভিল সার্জন বরাবার আইডিসিআর থেকে প্রেরিত এক মেইল বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
নাটোর সদর উপজেলায় আক্রান্ত ব্যক্তি বাস করেন ছাতনী ইউনিয়নের আগদিঘা গ্রামে। সপ্তাহখানেক আগে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে আসেন। গত ২২শে এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
গুরুদাসপুরে আক্রান্ত দুজনের একজনের বাড়ি নাজিরপুর ইউনিয়নে। তিনি গাজিপুরের এপিএস হোল্ডিং লিঃ নামের পোশাক কারখানার শ্রমিক। তিনি শারিরীক অসুস্থ্যতা নিয়ে গত ৯ এপ্রিল গুরুদাসপুরে নিজ বাসায় আসেন। পরদিন খবর পেয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অপরজনও একই ইউনিয়নের। তিনিও ওরিয়েন্ট এলিউর রেন্জার নামের গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ঢাকা থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে চলতি মাসের ১৮ তারিখ বাসায় আসেন। ২০ এপ্রিল তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী পাঠানো হয়।
সিংড়ায় আক্রান্ত ৫ জনের মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টেকনিশিয়ান। তিনি নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া বসবাস করেন। এছাড়া পৌর এলাকার গোডাউনপাড়ায় আক্রান্ত একজন নার্স, উত্তর দমদম এলাকায় একজন, কাটাপুকুরিয়ার একজন আক্রান্ত হয়েছেন। অপর একজন করোনা উপসর্গ নিয়ে কদিন আগে মারা গেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত নাটোর জেলায় ২৮৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১৪৪টি নমুনার রিপার্ট নেভেটিভ এসেছে। বাঁকি ১৩৮টি নমুনার রিপোর্ট স্থগিত ছিল। এরমধ্যে গত ২২ ও ২৩তারিখের নমুনার ৮টি রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে।
সিংড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানু বলেন, ‘নার্স আক্রান্ত হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আক্রান্ত এলাকাগুলো লকডাউন করা হবে।’
জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘পুলিশ আরও কঠোর হবে বুধবার থেকে। সকলকে ঘরে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, ‘আক্রান্ত এলাকা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের আইসোলেশন সেন্টারও প্রস্তত রাখা আছে। আক্রান্তরা চাইলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে। কাউকে বাইরে বের না হতে অনুরোধ করছি।’