নাটোর অফিস॥
শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, দুপুরে খাবার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক দিয়ে বোরো ধান কাটতে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক পাঠিয়ে দিচ্ছে নাটোর জেলা পুলিশ। পুলিশের নিজ খরচে বুধবার গুরুদাসপুর এবং বড়াইগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করে সুনামগঞ্জের হাওর ও চলনবিলের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত ১৩শ’শ্রমিক পাঠানো হয়।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে নাটোরের গুরুদাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে এক হাজার শ্রমিককে সুনামগঞ্জ, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের চলনবিল,হালতি বিল সহ বিভিন্ন স্থানে গাড়ীতে করে পাঠানো হয়।এ সময় তাদের থার্মাল স্ক্যানার দ্বারা শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করে স্বাস্থ্য বিধি মানার জন্য অনুরোধ করা হয় এবং শ্রমিকদের জন্য মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করে জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
শ্রমিক জাকির মন্ডল জানান,তার দলে ৫০জন সদস্য আছে। তারা প্রতিবছর এসময় গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়ন থেকে সুনামগঞ্জে ধানকাটার উদ্দেশ্যে যায়। দেশের এমন পরিস্থিতিতে সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বড় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। আমাদের জন্য এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।
শ্রমিক রহিম মোল্লা জানান,আমরা এসময় উপজেলার চাপিলা ইউনিয়ন থেকে দলবদ্ধ হয়ে ৩৫জন সদস্য ঢাকার গাজীপুর সহ আশে পাশের অনেক জেলা শহরগুলোতে ধান কাটার উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে বের হই। এসময় আমরা দলবদ্ধ হয়ে থাকি এবং দলবদ্ধ হয়ে বাড়ীতে আসি। এসময়ের উপার্জনের অর্থে আমাদের সংসার সারাবছর চলে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আমরা সবাই বড়ো চিন্তায় ছিলাম যে,আমাদের এবছর কি হবে,কিভাবে আমাদের সংসার চলবে। এমতাবস্থায় আমাদের পাশে থেকে যাত্রার সুবন্দোবস্ত করায় এবং করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে আমাদের মাঝে সুরক্ষার সামগ্রী বিতরণ এবং জনসচেনতামূলক উপদেশ প্রদানের জন্য পুলিশ প্রশাসকে ধন্যবাদ জানাই।
নাটোর জেলার পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, দেশের এই চলমান করোনা ভাইরাসের কারনে ধান কাটা শ্রমিকরা তাদের কাজে যেতে পারছেন না। এতে করে তাদের সহ কৃষকদের অনেক বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই ধান কাটার কথা বিবেচনা করে শ্রমিকদের বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের কাজে পাঠানো হচ্ছে। এই শ্রমিকরা যে এলাকায় তাদের ধান কাটার কাজের চাহিদা রয়েছে যেমন সুনামগঞ্জ,গাজিপুর,সিরাজগঞ্জ নাটোরের চলন বিল,হালতি বিল সহ বিভিন্ন স্থানে তাদের পাঠানো হচ্ছে। কোন ভাবেই ধান নষ্ট হওয়া সহ এই সকল শ্রমিকদের ক্ষতির মুখে না পরতে হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
এ সময় গুরুদাসপুর-সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আকতার,জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনারুল ইসলাম, গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহারুল ইসলাম সহ পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।