নাটোর অফিস॥
নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালী ইউনিয়নে ওএমএসের ১৭১ বস্তা চাল উদ্ধারের পর আটক ডিলারকে বাঁচাতে তৎপরতা শুরু করে খাদ্য বিভাগ ও স্থানীয় কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। যে পরিত্যক্ত ছাত্রাবাস থেকে চাল উদ্ধার করা হয়েছে, তাকে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় অনুমোদিত গুদাম হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে উপজেলা খাদ্য বিভাগ। খোদ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস এ নিয়ে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর পত্রও দিয়েছেন। তবে এ পত্রের যথার্থতা নিয়ে সংশয় তৈরী হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নাটোরের মূল ধারার গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষরিত একটি পত্র আসে যেখানে উল্লেখ করা হয় সাতপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ছাত্রবাসের যে কক্ষ থেকে চালগুলো উদ্ধার করা হয়, সে সম্পর্কে খাদ্য বিভাগ অবগত।
এই চিঠির বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সংশয় প্রকাশ করেন। মুজিববর্ষে প্রতিটি পত্রে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের লোগে থাকলেও চিঠিটিতে তা ছিলো না। স্মারক ও তারিখের ঘর ছিলো ফাঁকা। চিঠির মাঝখানে অপ্রত্যাশিতভাবে স্মারক নম্বর ৪৪৪ বসানো হলেও স্মারক নম্বরের গঠন কখোনই এমন না। চিঠির ডান পাশের লেখাগুলো সরলরেখা আকারে অস্পষ্ট ছিলো। তবে এসব অস্পষ্টতার মধ্যেই স্বাক্ষর করেছেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম বিশ্বাস। সমগ্র পত্রে স্বাক্ষর বাদে প্রতিটি লেখাই এক ব্যক্তির হাতের বলে মনে হয়েছে।
এ সংক্রান্ত সংবাদ দেশের প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর সিংড়ার ইটালি ইউনিয়ন ও উপজেলার স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা জেলার গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট বেশ কিছু কাগজ পৌছে দেন। সেসব কাগজের মধ্যে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পত্রে দেখা যায় শুরুতে স্মারক নম্বর ও তারিখ রয়েছে, যা দুপুরের পত্রে ছিলো না।
স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, চাল আত্নসাতের সাথে জড়িত রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা বা পরিচয়ধারী। তারা নিজেদের বাঁচাতে কাগজপত্র জালিয়াতি করে গণমাধ্যমকে ধোঁকা দিতে চেষ্টা করেছেন।
পত্র জালিয়াতির ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার আলোকে শেষ পর্যন্ত চাল আত্নসাতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।