নাটোর অফিস॥
নাটোর জেলায় আগত বহিরাগতদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে উদয়াস্ত ভূমিকা পালন করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল পর্যায়ের সদস্যরা। মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে দিনরাত এক করে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে পুলিশ। তবে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে আগত ব্যক্তিদের তথ্য গোপন এবং এলাকায় আড্ডাবাজি চালাচ্ছে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা স্পর্শ করবে না, এমন ধারণা থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে রমরমা আড্ডাবাজি অব্যাহত রেখেছে কিছু মানুষ। এতে সংক্রমণের চতুর্থ ধাপে খুব দ্রুত করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটতে পারে নাটোরে।
গত কয়েকদিনে জেলার অন্তত অর্ধশতাধিক স্থান থেকে সেল্ফ লকডাউনের তথ্য পাওয়া গেছে। লকডাউনের ব্যারিকেডের কিছুদূর গেলে দেখা যাচ্ছে জনসমাগমের ভয়াবহ চিত্র। দিনের অস্বাভাবিক সমাগম থাকলেও লকডাউন স্পটগুলো রাতে চলে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্তের দখলে।
সোমবার দিনে নাটোর শহরের এন এস সরকারী কলেজ মসজিদের বিপরীতে জলারপাড় এলাকায় ঢাকা ফেরত ব্যক্তিদের খোঁজ করতে আসে পুলিশ। সন্ধ্যার পর থেকে ওই এলাকার সবগুলো রাস্তা বাঁশ দিয় লকডাউন করে।
পরিচয় প্রকাশ করে এ ব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, রফিক নামের একজন ট্রাক চালক চৌধুরী বড়গাছা মাদ্রাসার পেছনে মাঠের পাশে একটি বাড়িতে বসবাস করেন। তিনি ট্রাক চালানোর সুবাদে ঢাকা ও নারায়নগঞ্জে ট্রিপ পরিচালনা করেন। স্থানীয়রা ওই ব্যক্তিকে ঘরে থাকার অনুরোধ করে রোববার তার বাড়িতে গেলে ক্ষিপ্ত হন ট্রাকচালক রফিক। এ ঘটানায় তার বাড়ি ঘেরাও করলে পালিয়ে যায় সে। ফিরে এসে সোমবার রাতে সদর্পে ঘোষণা দেন কোন পুলিশ তার কিছু করতে পারবে না। এছাড়া ওই এলাকায় নির্মাণাধীন বেশ কিছু বাড়িতে কাজ করছেন পুঠিয়ার তোকিয়া বাজার, রাজশাহীর বাগমানাসহ নলডাঙ্গা এলাকার নির্মাণ শ্রমিকরা। দ্রুত বাড়ির কাজ শেষ করার স্বার্থে পুলিশ এলে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে শ্রমিকদের সরিয়ে রাখছেন বাড়ির মালিকরা। পুলিশ চলে গেলে আবারও কাজ শুরু করছে পুরোদমে।
জানা যায়, সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢাকা ফেরত ভাগিনার আসার বিষয়টি এলাকায় চাউর হলে ভাগিনা বাড়ি ত্যাগ করে। এতে ওই ব্যবসায়ী পুলিশি জেরা থেকে বাঁচতে এলাকার যুবকদের বাঁশ দিয়ে লকডাউন করতে সহায়তা করেছেন।
এদিকে প্রশাসনিক হয়রানির শঙ্কায় লকডাউনের ব্যাপারে মুখ খুলতে চায় না এলাকাবাসী। আবার লকডাউনের অন্তরালে জনসমাগম ও বহিরাগত ব্যক্তিদের ব্যাপারেও অসহায় তারা।
পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে করা এমন সেল্ফ লকডাউন সম্পর্কে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ব্যক্তিস্বার্থে কেউ লকডাউন করতে পারবেন না। এ ধরণের লকডাউনের ব্যপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।