নাটোর অফিস॥
নাটোরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরণের প্রস্ততি গ্রহণ করেছে নাটোর জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ। তবে সম্ভাব্য করোনা আক্রান্তদের সেবা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর ও শয্যা সংকটে ভুগছে স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনা আইসোলেশন সেন্টার প্রস্ততের পর ৪০টি শয্যা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশন নাটোর জেলা শাখা। তবে এখনও হয়নি পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ৪০টি ভেন্টিলেটর বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়।
নাটোর জেলায় সম্ভাব্য করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য একমাত্র আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে নাটোর সদর হাসপাতালকে প্রস্তত করা হয়েছে। করোনার সংক্রমন বৈশিষ্ট্যে গুরুত্ব দিয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা অন্য রোগীদের কথা চিন্তা করে আইসোলেশন সেন্টারটি সম্প্রসারিত করে শহরের উপকন্ঠ একডালায় স্থাপন করা হয়েছে। এখানকার পরিত্যক্ত ভবঘুরে আশ্রয়ণ কেন্দ্রটিকে বসবাস উপযোগী করে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ প্রয়োজনীয় শয্যার ব্যবস্থা করতে না পারায় এগিয়ে এসেছে বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারগুলো। জেলার প্রতিটি বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারগুলোতে বাধ্যতামূলক করোনা আইসোলেশন ইউনিট স্থাপনের নির্দেশ থাকলেও উপযুক্ত নার্স ও চিকিৎসক নিশ্চিত করতে না পারায় সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে প্রশাসন। তবে ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মালিকরা আইসোলেশন সেন্টারের জন্য প্রযোজনীয় শয্যাসহ বিভিন্ন সহায়তার আশ্বাস দেন। ইতোমধ্যে ওই আইসোলেশন সেন্টারে ৪০টি শয্যা দিয়েছেন তারা।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আইসোলেশন সেন্টারটিতে শয্যা স্থাপনের পর সম্ভাব্য করোনা রোগী রাখার ব্যবস্থা হলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভেন্টিলেটরের এখনও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩১শে মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়ে ৪০টি ভেন্টিলেটর চেয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে আইসোলশনে চিকিৎসা সেবার জন্য কতজন চিকিৎসক, নার্স, অপারেটরসহ জনবল কাজ করবে তা এখনো নির্ধারণ করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। আজ শনিবার এ সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা আছে।
বাংলাদেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশন নাটোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল রাজা বলেন, করোনা আইসোলেশন ইউনিটে প্রাথমিকভাবে আমরা ৪০টি শয্যা দিয়েছি। শিঘ্রই আরও ৩০টি শয্যা দেয়া হবে। এছাড়া আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে সহযোগিতা করবো।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান বলেন, নাটোরে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। তবুও যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সার্বিক প্রস্ততি রয়েছে। আইসোলেশন সেন্টারে শয্যা স্থাপন করা হচ্ছে। ভেন্টিলেটর চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। সম্ভাব্য করোনা আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত জনবল নির্ধারণ কাজ চলছে।
প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহে জেলায় করোনা সন্দেহে প্রেরিত ২৬টি নমুনার মধ্যে ২১টির ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। বাকী ৫টির ফলাফল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।