নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম, নাটোর॥
নাটোরের বড়াইগ্রামে দাম্পত্য কলহের সমঝোতার কিছুক্ষণ পর এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। ওই গৃহবধুর নাম চাঁদ সুলতানা রাণী (৩৬)। নামে এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাণী উপজেলার বড়াইগ্রাম পৌরসভার মৌখাড়া এলাকার রবিউল করিমের স্ত্রী এবং লালপুর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল মোমিন মন্ডলের মেয়ে।
আজ শুক্রবার(৩রা এপ্রিল) দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বামীর দাবী, রাণী আত্নহত্যা করেছে। আর রাণীর পরিবারের দাবী, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রাণীর ভাই সুইট বলেন, ১৭ বছর আগে পরিবারে পছন্দে রাণীর বিয়ে হয়। তখন একটি এনজিওতে চাকুরী করতেন রবিউল করিম। সেখানে এক সহকর্মীর সাথে পরকিয়ায় জড়ানোর ফলে চাকুরী হারায়। পরে আকিজ কো-অপারেটিভ ব্যাংক, বনপাড়া, নাটোর শাখায় পুনরায় চাকরী হয়। এখানে চাকুরী কালে পুনরায় স্থানীয় এক মেয়ের সাথে পরকিয়ায় জড়ায় রবিউল। এর প্রতিবাদ করলেই বোনের উপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। ইতিমধ্যে বোনের ঘরে এক ছেলে (১৪) ও এক মেয়ে (৭) জন্ম হয়। বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতন সহ্য করে যাচ্ছিলেন রাণী। তবু অকারনেই নির্যাতন করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতভর শারীরিক নির্যাতন করে ঘরের খাটের সাথে বেধে রাখা হয় রাণীকে। খবর পেয়ে সকালে তিনি (সুইট) ও বড়ভাই আলতাব হোসেন গিয়ে বোন-রবিউলের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি ফেরা মাত্র মোবাইল ফোনে রবিউল জানায় রাণী গলায় দড়ি দিয়ে আত্নহত্যা করেছে।
সুইট অভিযোগ করেন, আমরা ফিরে আসার পর বোনকে গলাটিপে হত্যা করে আত্নহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে মোবাইল বন্ধ করে স্বামী রবিউল বাড়ি থেকে পালিয়েছে।
নিহতের বড়ভাই আলতাব হোসেন বলেন, বোনের মুখে তাকে নির্যাতনের অনেক কথা শুনেছি তবু বাচ্চদের কথা ভেবে এখানেই থেকে গেছে। অবশেষে তাকে যে রবিউল মেরে ফেলবে এটা ভাবতে পারিনি।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের বড়ভাই লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।